খুনের হাত থেকে বেঁচেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন
২০ জুন ২০১০সেই কাল রাত্রে আইএফপি'র ব্রিগেড নেমেছিল বোইপাটং টাউনশিপের মানুষদের কচুকাটা করতে৷ মা মারিয়া'র হাত ধরে পালানোর কথা মোকোয়েনা আজ অবধি ভুলতে পারেননি৷ সে কাহিনী নিজেই শুনিয়েছেন সাংবাদিকদের৷ ‘‘ওরা এসেছিল রাতে৷ ওরা জীপে চড়ে আমাদের তাড়া করে, আমাদের ওপর গুলি চালায়৷ গোটা টাউনশিপ কাঁদছিল,'' বলেন মোকোয়েনা৷ পরের দিন সকালে গুজব ছড়ায় যে, ওরা সব ছেলেদের মেরে ফেলবে৷ মোকোয়েনার মা নাকি তাঁর পুরুষ সন্তানকে মেয়েদের ফ্রক পরিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেন৷ সেই ছেলে আজ ২৯ বছর বয়সের যুবা: পরনে বহুমূল্য ডিজাইনার স্যুট, কানে একটি ছোট্ট হীরে চকমক করছে৷
ইতিহাস
ভ্যান্ডারবাইলপার্কের কাছে বোইপাটং-এর সেই হত্যাকাণ্ড আজ দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অঙ্গ হয়ে আছে৷ ঐ হত্যাকাণ্ডের কারণে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এএনসি ইনকাথা ফ্রিডম পার্টি আইএফপি'র সঙ্গে বর্ণবৈষম্যের অবসান সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা বন্ধ করে দেয়৷ আইএফপি ছিল শ্বেতাঙ্গ শাসকদের প্রতি অনুরক্ত দল৷ এবং তারাই বোইপাটং-এ হত্যাকারীর দল পাঠিয়েছিল৷ সেবার ৪৬ জন মানুষের রক্ত মিশে যায় টাউনশিপের ধুলায়৷ এর দু'বছর পরে নেলসন মান্ডেলা'র উদয়ে সম্প্রীতি আবার সম্ভব হয়৷
‘‘নেভার ফরগেট''
আজও যখন আরন মোকোয়েনা বোইপাটং-এ যান, শিশুর দল ছুটে আসে তাদের কিংবদন্তির নায়ক'কে দেখতে৷ আর মোকোয়েনা ভাবেন তাঁর মা তাঁকে যা বলেছিলেন: ‘‘নেভার ফরগেট৷''
সঙ্গে আরেকটি গল্প যোগ না করে পারছি না৷ জার্মানির বুন্ডেসলিগার খেলোয়াড় গ্রাফিৎ এবার ব্রাজিল দলে৷ কিন্তু এই গ্রাফিৎ'ও ছেলেবেলায় সাও পাওলো'র রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের ব্যাগ কুড়িয়ে জীবনধারণ করেছে৷ প্লাস্টিকের ব্যাগ তো দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বত্র: জোহানেসবার্গের রাস্তায় উড়ছে, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে রয়েছে, ভিখিরিরা তাদের সামান্য যা-কিছু ঐ প্লাস্টিকের ব্যাগে করে নিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ আর এ'সব দেখে গ্রাফিৎ'ও হয়তো ভাবছেন: ‘‘নেভার ফরগেট৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন