1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘খাবার উপভোগ করার অর্থই মোটা হওয়া নয়’

৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০

যারা মোটা বা যাদের ওজন বেশি, সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয় তারা নিশ্চয়ই বেশি খান বা খেতে খুব ভালোবাসেন৷ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু ভিন্ন মত পোষণ করেন৷ জার্মানির খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, খাবার উপভোগ করার অর্থই মোটা হওয়া নয়৷

https://p.dw.com/p/LtJ4
ফাইল ফটোছবি: AP

যদি টাটকা খাবার খাওয়া হয় তাহলে তা খেতে তো ভালো লাগবেই এবং শরীরের জন্যও তা উপকারী৷

খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার সেগুলো হচ্ছে , প্রতিদিন এক রকম খাবার না খাওয়া৷ খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে শস্যদানা, নানা রকম বীজ, গম,যথেষ্ট শাকসবজি, ফলমূল, দুধ বা দুধের তৈরি খাবার, মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি৷

খাদ্য সংস্থার তথ্যে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যকর, অস্বাস্থ্যকর বা নিষিদ্ধ খাবার বলে কোন কথা নেই৷ আসলে তা নির্ভর করে খাবারের পরিমাণ, খাবার নির্বাচন এবং খাদ্যের উপকরণের ওপর৷ তারপর রয়েছে যে খাচ্ছে, সে ছেলে না মেয়ে, তার বয়স, উচ্চতা,ওজন এবং সে দিনে কতটুকু পরিশ্রম করে আর সেই শ্রম শারীরিক না মানসিক৷ এসব কিছুর ওপর নির্ভর করে তার খাবারের পরিমাণ৷ রুটি, নুডলস, ভাত, বিভিন্ন শস্যদানা আর আলু - যাতে চর্বি নেই বললেই চলে কিন্তু রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, পুষ্টি এবং আঁশ যা প্রতিদিনই মানুষের শরীরে প্রয়োজন৷

অবশ্যই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় থাকতে হবে শাকসবজি৷ তবে তা হতে হবে তাজা৷ আর ফল বা ফলের রস দিনে পাঁচবার খেলেও ক্ষতি নেই৷ ফলের কথা বলা হলেই অনেকে ধরে নেন ফল হতে হবে দামি বিদেশি কোন ফল৷ আসলে কিন্তু তা নয়৷ যখন যে দেশে যে ঋতুতে যেসব ফল পাওয়া সেটা খাওয়াই ভালো৷ কারণ সেসব ফল তাজা তো হয়ই দামেও হয় কিছুটা সস্তা৷ বিভিন্ন ফলে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে৷ কথায় আছে দিনে একটি করে আপেল খেলে ডাক্তারের কাছ থেকে দূরে থাকা সম্ভব৷ কারণ আপেলে রয়েছে প্রচুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন৷ দিনের শুরুতে মানে সকালের নাস্তা ভালো করে করতে হবে তা না হলে কনসেনষ্ট্রেশন বা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে৷ যা বাড়ন্ত বয়সের ছেলেমেয়েদের বেলায় লক্ষণীয়৷

Ein dicker Mann
এক স্থূলাকার ভারতীয়ছবি: picture alliance/dpa

প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় অবশ্যই দুধ বা দুধজাতীয় খাবার রাখতে হবে৷ তবে মাছ, মাংস ডিম প্রতিদিন প্রয়োজন নেই৷ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সপ্তাহে এক দুদিন খেলেই যথেষ্ট৷ এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অন্যান্য ভিটামিন৷

চর্বি জাতীয় খাবার খুবই মুখরোচক সন্দেহ নেই তবে মাংসের চর্বি এবং ঘি বা অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার থেকে দূরে থাকাই ভালো কারণ এসব খাবার বেশিদিন খেলে তা ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিতে পারে৷ শরীর হয়ে উঠবে ভারসাম্যহীন৷ মানুষের সুষম খাদ্যাভাস আসলে শুরু করতে হয় ছোটবেলা থেকেই৷ উপমহাদেশের অনেক মাকে বলতে শোনা যায় যে তাঁদের বাচ্চারা খেতে চায়না৷ এসব মায়েদের জন্য পরামর্শ, একঘেয়ে খাবার থেকে বেরিয়ে এসে বাচ্চাদের একেকদিন একেক রকম খাবার দিন৷ সামান্য পরিমাণে ভাত, সবজি আলু বা রুটি দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে প্লেটে তুলে দিলে বাচ্চারা দিব্যি খেয়ে নেবে৷ খাবার শেষে একটু ফল বা ঘরে তৈরি দুধের কোন ডেজার্ট থাকলে বাচ্চাদের খাওয়ার আগ্রহ অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে৷ ছোটবেলা থেকে খাবারের গুণাগুণ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিলে ও পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস তৈরি করতে পারলে এসব বাচ্চা বড় হলে তেমন কোন সমস্যা হবার কথা নয়৷ আমরা সবাই জানি জীবনে সফল হবার প্রথম শর্তই হলো সুস্থ থাকা৷ আর ,সুস্থ থাকতে হলে চাই পুষ্টিকর খাবার৷

জার্মান টেলিভিশনে রান্নার অনুষ্ঠানগুলোর সবচেয়ে জনপ্রিয় রন্ধন শিল্পী জারাহ ভিনার বলেছেন, এসময়ের অনেক ছেলেমেয়েই কিভাবে স্বাস্থ্যকর খাবার প্রস্তুত করতে হয় জানেনা৷ অন্যদিকে ওরা খুব ভালো করেই জানে কোথায় কোন রেস্তোরাঁয় সবচেয়ে ভালো বার্গার, ফ্রেঞ্চফ্রাই বা এজাতীয় ফাষ্টফুড পাওয়া যায় যা শরীরে জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর৷

সবশেষে বলা যায় রান্না করার সময় মনে রাখতে হবে কম তাপ, অল্প সেদ্ধ , কম তেল আর কম পানির ব্যবহারের কথা৷ এসব দিকে নজর রাখলেই কেবল খাবারের আসল স্বাদ ও পুষ্টি ধরে রাখা সম্ভব৷ আমরা কি খাচ্ছি, কেন খাচ্ছি তা বুঝে শুনে খেতে হবে৷ আর যেকথাটা একেবারেই ভুলে গেলে চলবেনা তা হচ্ছে দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে৷ আর যদি সপ্তাহে এক বা দুদিন কোন হালকা ব্যায়াম করা যায়, পাশাপাশি মনকেও প্রফুল্ল রাখা যায় তাহলে তো আর কথাই নেই৷ সুস্থ, সুন্দর, তারুণ্য ভরা জীবন তখন হাতের মুঠোয়৷

প্রতিবেদক : নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারুক