1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদায় নিলেন ‘লাস্ট ক্রিসমাস' গায়ক জর্জ মাইকেল

২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

৫৩ বছর কি বা এমন বয়স? অথচ এই অল্প বয়সেই পৃথিবীর মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন আশির দশকের সাড়া জাগানো ব্রিটিশ পপ তারকা জর্জ মাইকেল৷ রোববার রাতে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এই শিল্পীর মৃত‌্যু হয়৷

https://p.dw.com/p/2UsUj
জর্জ মাইকেল
ছবি: picture-alliance/Photoshot

কেবল স্বতন্ত্র কণ্ঠই নয়, চেহারার কারণেও মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে ৮০ দশকে তরুণীদের হৃদয়ে ঝড় তুলেছিলেন ‘কেয়ারলেস হুইসপার'-এর এই গায়ক৷ সেই তরুণীরাই হয়ত আজ আক্ষেপ করে বলছেন ‘নেভার গনা ড্যান্স এগেইন'৷ তবে অনেকেই দীর্ঘদিন অবধি জানতেন তা মাইকেল আসলে নারীদের না পুরুষদের পছন্দ করতেন, অর্থাৎ তিনি সমকামী৷ ১৯৯৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে পাবলিক টয়লেটে সমকামী সঙ্গীর সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়৷

তবে এই গীতিকার এই ঘটনায় দমে যাননি৷ এ নিয়েও সিঙ্গেল ভিডিও বের করেন, ‘আউটসাইড', যেখানে লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যাঙ্গ করেন তিনি৷ সমকামিতা নিয়ে এরপর তিনি সোচ্চারই হয়েছিলেন, কোনো ধরনের রাখ ঢাক ছিল না তাঁর মধ্যে৷

তবে গত কয়েক বছর ধরে ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ ছিলেন৷ স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছিল, এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের অভিযোগও ছিল৷ তবে তাঁর কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হয়নি, যাকে বলে ‘গোল্ডেন ভয়েস'৷ ভক্তরা আশায় ছিলেন কোনোদিন হয়ত আবারও আগের মতো দাপটের সঙ্গে মঞ্চে ফিরবেন মাইকেল৷

খ্যাতির শীর্ষে থাকা অবস্থায় তিনি নিজের যৌনতা নিয়ে সমস্যায় ভুগছিলেন৷ সে সময় হতাশা তাঁকে গ্রাস করে৷ ৯০-এর দশকে সমকামী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ে এইডস৷ মারণব্যাধিটি তাঁর পার্টনারের জীবন কেড়ে নেয়৷ পরে এক সাক্ষাৎকারে মাইকেল জানিয়েছিলের, এই মৃত্যুতে তিনি ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন৷ বেশ কয়েক বছর সময় লেগেছে এই শোক কাটিয়ে উঠতে৷ ২৪ বছর বয়সের আগে তিনি নিজের যৌনতার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না৷ ২৭ বছর বয়সে তিনি প্রথম এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান৷ তিন বছর পর ঐ সঙ্গীর মৃত্যুর শোক যখন কাটিয়ে উঠছিলেন, ঠিক তখনই হারান নিজের মাকে৷ জীবনে নেমে আসে অমানিশা৷

১৯৬৩ সালের ২৫ জুন লন্ডনে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর সংগীত জীবনের শুরুটা হয়েছিল পাতাল রেলে গিটারের সঙ্গে গান গেয়ে৷ স্কুলের বন্ধু অ‌্যান্ড্রু রিজলিকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৮১ সালে জর্জ মাইকেল গড়ে তোলেন ব‌্যান্ড দল ‘ওয়‌্যাম'৷ ১৯৮৪ সালে ‘মেইক ইট বিগ' যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও দারুণ সাফল‌্য পায়৷ ‘ওয়েক মি আপ বিফোর ইউ গো', ‘কেয়ারলেস হুইসপার', ‘লাস্ট ক্রিসমাস' এই গানগুলো জর্জ মাইকেলকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দেয়৷ বিলবোর্ডের সর্বকালের সেরা ১০০ গায়কের তালিকায় ৪০ নম্বরে জর্জ মাইকেলের অবস্থান৷ তিন দশকের সংগীত জীবনে আটবার তিনি জিতেছেন গ্র্যামি৷

জর্জের মৃত‌্যুর পর বন্ধু রিজলি বলেছেন, প্রিয় বন্ধুর মৃত‌্যুতে তাঁর হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে৷

১৯৮৬ সালে ভেঙে যায় ওয়‌্যাম৷ এরপর মঞ্চে শুরু হয় তার একক পারফর্মেন্স৷ টিন আইডল থেকে পরিণত হন সুপারস্টারে৷ বিশ্বের অন‌্যতম ব‌্যবসা সফল সংগীত শিল্পীতে পরিণত হন তিনি৷

তাঁর মৃত্যুতে এক ভক্ত অত্যন্ত দুঃখের সাথে ২০১৬ সালকে দায়ী করেছেন আরও এক শিল্পীর প্রাণ কেড়ে নেয়ায়৷

২০১১ সালে লন্ডনে এক কনসার্ট চলাকালীন তাঁকে নিয়ে টেলিগ্রাফ একটি প্রতিবেদন লিখেছিল, যেখানে লেখা হয়েছিল জর্জ মাইকেল বলেছেন, ‘‘আমি চাই সবাই আমাকে ভালোবাসুক৷''

জর্জ মাইকেলের হয়ত জানা ছিল না কত ভক্ত তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন৷ ভালোবাসার আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন না ফেরার দেশে...

এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য