কোন পাখি সবচেয়ে উঁচুতে ওড়ে
সব পাখি ওড়ে না, তবে অধিকাংশ পাখি ওড়ে৷ আকাশে ওড়ে আরো কম পাখি৷ কিন্তু তাদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচুতে ওড়ে কারা?
রুপেল-এর শকুন (৩৭,১০০ ফুট)
এদের বাস মধ্য আফ্রিকার সাহেল এলাকায়৷ এদের সংখ্যা নাকি কমে হাজার ত্রিশেকে দাঁড়িয়েছে৷ উনবিংশ শতকের জার্মান প্রকৃতিবিজ্ঞানী এডুয়ার্ড রুপেল-এর নামে এদের নাম৷ শকুনেরা আকাশে উড়তে উড়তে মাটিতে মরা খোঁজে৷ রুপেল-এর গ্রিফন শকুন সে কাজে ১১,৩০০ মিটার বা ৩৭,১০০ ফুট অবধি উড়তে পারে৷
সারস পাখি (৩৩,০০০ ফুট)
এরা পরিযায়ী পাখি৷ এদের পরিভ্রমণের পথে সুইডেন, জার্মানি বা চীনসহ নানা দেশ পড়ে৷ হিমালয় পর্বতমালার ওপর দিয়ে ওড়ার সময় সারসের দল ১০,০০০ মিটার বা ৩৩,০০০ ফুট অবধি ওঠে৷
বার-হেডেড গুজ (২৯,০০০ ফুট)
সালিম আলির সাধারণ পাখির বইয়ের বাংলা অনুবাদ বলছে, এদের নাম নাকি রাজহাঁস৷ হিমালয় পার হয়ে ভারতে আসার সময় এই পরিযায়ী পাখিদের সরাসরি মাউন্ট এভারেস্টের ওপর দিয়ে উড়তে দেখা গেছে! এমনকি তার ছবিও আছে৷ কাজেই এভারেস্টের উচ্চতা ধরে নির্দ্বিধায় বলা চলে, এরা ৮,৮০০ মিটার বা ২৯,০০০ ফুট অবধি উড়েছে৷
হুপার সোয়ান (২৭,০০০ ফুট)
বাংলায় পোশাকি নাম হবে মরাল – (আসলে তা-ও নয়, কেননা মরাল হলো ‘লেসার হুইসলিং টিল’) – লোকে অবশ্য রাজহাঁস বলেই ডাকে৷ উত্তর অ্যামেরিকায় এদের নাম ট্রাম্পেটার সোয়ান, ট্রাম্পেটের আওয়াজের মতো ডাক বলেই বোধহয়৷ পরিভ্রমণ এদের রক্তে, তাই এরা ওড়ে ৮,২০০ মিটার বা ২৭,০০০ ফুট পর্যন্ত৷
অ্যাল্পাইন চাফ (২৬,৫০০ ফুট)
‘চাফ’ বস্তুত একটি কাক জাতীয় কালো রঙের পাখি৷ এরা উঁচু পাহাড়ি এলাকায় বাসা বাঁধতে পারে, কেননা এদের ডিমগুলোয় ছোট ছোট ফুটো কম থাকে বলে ডিমগুলো তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় না৷
বিয়ার্ডেড ভালচার (২৪,০০০ ফুট)
এদের জার্মান নাম ‘ল্যামারগায়ার’ বা ভেড়াখেকো শকুন৷ ইউরোপ থেকে শুরু করে এশিয়ার পর্বতাঞ্চলে, এমনকি আফ্রিকার ইথিওপীয় পর্বতাঞ্চলেও এদের দেখতে পাওয়া যায়৷ অবশ্য আইইউসিএন-এর তালিকায় এদের ‘প্রায় বিপন্ন’ হিসেবে দেখানো হয়েছে৷ এরা উড়তে পারে ৭,৩০০ মিটার বা ২৪,০০০ ফুট অবধি৷
রাডি শেলডাক (২২,০০০ ফুট)
ভারতে এদের নাম ব্রাহমিনি ডাক বা ব্রাহ্মণী হাঁস৷ হাঁস, কাজেই জলে থাকে৷আবার পরিযায়ী পাখি হিসেবে হিমালয় পার হয়ে ওদের ডিম পাড়া আর ছানাপোনা মানুষ করার জায়গায় যায়৷ কাজেই সদ্য আবিষ্কৃত হয়েছে যে, ব্রাহ্মণী হাঁসেরা ৬,৮০০ মিটার বা ২২,০০০ ফুট অবধি উড়তে পারে৷