কৃষকের নীরব বন্ধুর কথা
ফসল উৎপাদনে কেঁচোর সহায়তার কথা বলে শেষ করা যাবে না৷ কম্পোস্ট সার তৈরিতে, জমিক্ষয় রোধ করতে, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে নীরবে কৃষক সমাজকে সহায়তা করে যায় এই প্রাণিটি৷
অর্ধ সত্য
প্রচলিত আছে কেঁচো অর্ধেক হয়ে গেলেও নাকি তার দুটি অংশ আলাদা আলাদাভাবে বাঁচতে পারে৷ কথাটি কিন্তু সত্যি নয়৷ এই অবস্থায় হয়ত কেবল সামনের অংশটি বেঁচে যেতে পারে, কারণ, সেখানেই প্রাণ রক্ষার জন্য অপরিহার্য অংশগুলো থাকে৷ তবে ক্ষত অংশে সংক্রমণ দেখা দিলে কিন্তু সামনের অংশটির জীবনও সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে৷
নিষ্ঠাবান কর্মী
মাটিতে মিশে থাকা পচা লতাপাতা, মরে যাওয়া পোকার শরীরের অংশ, কীটপতঙ্গের ডিম, ছোট বীজ ইত্যাদি জৈব উপাদান খেয়ে থাকে কেঁচো৷ মাটির উপরের স্তর থেকে এসব খাবার খেতে খেতে গর্ত খুঁড়ে মাটির ভেতরে ঢুকতে থাকে কেঁচো৷ ফলে তার মুখ থাকে মাটির ভেতর আর পায়ুপথ থাকে উপরের দিকে৷ এভাবে মাটির উপরের শক্ত স্তর নীচে চলে গিয়ে নীচের নরম মাটি উপরে চলে আসা৷ পুষ্টিসমৃদ্ধ এই মাটি উত্তম সার হিসেবে কাজ করে৷
মাটিক্ষয় রোধে সহায়ক
ছবিটি ভালো করে খেয়াল করুন৷ কেঁচো মাটি খোঁড়ার পর মাটির উপর দানার মতো জমে থাকা মাটির ছবি এটি৷ নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এই মাটির দানা জমিক্ষয় রোধ করে৷
প্রজনন অবস্থায় কেঁচো
ছবিতে উপরে ডানপাশে ব্যান্ডের মতো দেখতে কমলা রংয়ের যে অংশ দেখতে পাচ্ছেন তার মানে হচ্ছে এই কেঁচোটির প্রজনন অবস্থা চলছে৷ প্রথম দেখায় কেঁচোর মাথা আর পা খুঁজে পেতে দেরি হতে পারে৷ তবে ব্যান্ডটি যেখানে দেখা যাবে, ধরে নিতে হবে কেঁচোর মাথা সেদিকে, কাছাকাছিই আছে৷
টানেল নির্মাতা
কেঁচোর এই গুণটির কারণে পানি দ্রুত মাটির ভেতরে প্রবেশ করতে পারে৷ এছাড়া গাছেরাও তাদের কাণ্ড সহজে মাটির নীচে চারিদিকে ছড়াতে পারে৷ ৫০ হেক্টর সমপরিমাণ জমিতে প্রায় চার লক্ষ কিলোমিটারের সমপরিমাণ পথ তৈরি করে কেঁচো৷
মাটির উপরে বিপদ
বৃষ্টির শব্দ পেয়ে কেঁচো আনন্দে মাটির উপরে উঠে আসে৷ আর তখনই পাখিদের খাবারে পরিণত হয় তারা৷
কতগুলো থাকে
মেশিনে চাষ হওয়া ও কীটনাশক মিশ্রিত এক বর্গমিটার জমিতে ৩০টির মতো কেঁচো থাকতে পারে৷ আর যেসব জমিতে একের অধিক শস্যের চাষ করা হয় সেখানে ১২০টির মতো কেঁচো পাওয়া যেতে পারে৷