কাফকার অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি বেরোবে ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে
২০ জুলাই ২০১০১৯২৪ সালে যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর৷ বয়স ছিল তখন মাত্র ৪০৷ কাফকা কিন্তু বিশ্বসাহিত্যে এক অমর নাম হিসেবেই সমাদৃত তাঁর জীবদ্দশা থেকেই৷ কাফকা সাহিত্যে এক বড়মাপের পরিবর্তন এনেছিলেন৷ মনোজগতের আশ্চর্য বিশ্লেষণ থাকত তাঁর সাহিত্যে৷ যদিও নিজের লেখা প্রকাশ করতে আপত্তি ছিল তাঁর নিজেরই৷ মৃত্যুশয্যায় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ম্যাক্স ব্রডকে তিনি বলেছিলেন, তাঁর যাবতীয় পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলতে৷ কিন্তু ব্রড কাফকার কথা শোনেন নি৷ তাঁর উপন্যাস প্রকাশ করেছিলেন৷ আর বাকি পাণ্ডুলিপি ব্রড নিয়ে যান ইসরায়েলে৷ দিয়ে যান তাঁর সেক্রেটারি এস্থার হফের হাতে৷ পরবর্তীতে এস্থার সেই মূল্যবান পাণ্ডুলিপি তুলে দেন তাঁর দুই কন্যার হাতে৷
সেই দুই কন্যা এরপর কাফকার অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপিগুলি বিক্রি করতে উদ্যোগী হন৷ তখনই আসরে নেমে পড়ে ইসরায়েল৷ তাদের দাবি, কাফকা ছিলেন ইহুদি৷ অতএব তাঁর পাণ্ডুলিপি ইসরায়েলের জাতীয় সম্পত্তি৷ আদালতে গড়ায় মালিকানা নিয়ে মামলা৷ পাণ্ডুলিপিগুলি গচ্ছিত হয় জুরিখ আর তেল আভিভের ব্যাঙ্কের ভল্টে৷
সেই মালিকানার দাবি নিয়ে মামলাতেই অবশেষে তেল আভিভ আদালতের সিদ্ধান্ত, এবার খোলা হবে জুরিখের চারটি ভল্ট৷ এক কাফকা বিশেষজ্ঞের ওপর দায়িত্ব পড়েছে পাণ্ডুলিপিগুলি খতিয়ে দেখে তার তালিকা প্রস্তুত করে আদালতকে রিপোর্ট করতে৷ আজ মঙ্গলবার সেই ভল্ট খোলার দিন৷ গোটা বিশ্বের সাহিত্যমহল জানতে আগ্রহী, কী রয়েছে ‘মেটামরফসিস'-এর লেখক কাফকার অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপিতে৷ জার্মানির সাহিত্য সংগ্রহশালা ইতিমধ্যেই এই পাণ্ডুলিপিগুলি কিনে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে৷
কিন্তু এত সহজ হবে না সেই ঘটনা৷ আইনের মারপ্যাঁচে কাফকার অপ্রকাশিত রচনা যে কী তা জানা যাবে না এখনই৷ ধৈর্য ধরতে হবে আরও কতদিন যে, তা বলাও মুশকিল৷ সুতরাং মৃত্যুর ৮৬ বছর পরেও কাফকার শেষ ইচ্ছেই যেন এক অর্থে বাস্তবায়িত হয়ে চলেছে৷
নিজের রচনার কথা কাফকা যে জানাতে চাইতেন না কাউকেই!
প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা : হোসাইন আব্দুল হাই