কাগজের বইয়ের প্রতি মার্কিনিদের আগ্রহ কম
মার্কিনিরা ক্রমশ কাগজের বইয়ের বদলে ই-বুক কিনছে৷ আর এ সব তারা কিনছে অ্যামাজনে৷ বইয়ের সঙ্গে মার্কিনিদের সম্পর্ক জানতে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরেছেন ডয়চে ভেলের রাইনার ট্রাউব৷ চলুন তাঁর চোখে আমরাও দেখি৷
‘‘রিডিং রোড ট্রিপ’’
‘‘অ্যামাজন না থামলে, যুক্তরাষ্ট্রে সাহিত্যের ঐতিহ্য শেষ হয়ে যাবে’’, বলেন অ্যান্ড্রু ওয়েলি৷ নিউ ইয়র্কের একজন প্রভাবশালী সাহিত্য এজেন্ট তিনি৷ মার্কিনিদের বই পড়ার বর্তমান সংস্কৃতি জানতে তাই এই রোড ট্রিপ৷
নিউ ইয়র্কের বইয়ের উৎস
ম্যানহ্যাটনের ব্রডওয়ের একটি বড় অংশ জুড়ে একসময় অনেক বইয়ের দোকান ছিল৷ গত শতকের ষাটের দশক থেকে অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায়৷ বর্তমানে সেখানে বইয়ের দোকান বলতে ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ‘স্ট্রান্ড বুকস্টোর’-টি রয়েছে৷
বিশ কিলোমিটার বই
স্ট্রান্ড বুকস্টোর বর্তমানে ব্যবহৃত বই বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করছে৷ অনলাইন স্টোরের ধাক্কায় বিভিন্ন বইয়ের দোকান যখন বন্ধ হচ্ছে বাধ্য হয়ে, সেসময়ও নিজেদের ধরে রেখেছে স্টোরটি৷ সেখানে এখন আড়াই মিলিয়নের মতো বই রয়েছে৷ যা তাকের হিসেবে বিশ কিলোমিটার লম্বা৷
পড়ি, পড়ি না
ম্যানহ্যাটনের পাবলিক লাইব্রেরির সামনের সিঁড়িতে বসে আছেন তারা তিনজন৷ তারা চাইলে ফেসবুকে ফিড থেকে শুরু করে গ্যোটে পর্যন্ত সর্বত্রই বিচরণ করতে পারে৷ তবে মার্কিনিদের মধ্যে না পড়ার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে৷ প্রতি চারজনের একজন মার্কিনি পড়েন না৷ বাকিরা বছরে গড়ে পাঁচটি বই পড়েন৷ সেগুলো কাগজের বইও হতে পারে কিংবা ডিজিটাল৷
অটোগ্রাফ, প্লিজ!
ফটোগ্রাফির বইয়ের চাহিদা সবসময়ই আছে৷ ইন্ডিয়ানাপোলিশের ছোট্ট পাবলিশার ওয়াল্টস বুকস প্রতিবছর নির্দিষ্ট কিছু বই প্রকাশ করে৷ ছবিতে আলোকচিত্রশিল্পী ক্যালি এন্ডারসন-স্টেলিকে দেখা যাচ্ছে৷ তাঁর একটি বই প্রকাশ হয়েছে সম্প্রতি৷
জ্ঞানমন্দির
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ‘লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরনো গ্রন্থাগার৷ এখানে প্রতি বছর ১২ হাজার নতুন বই যোগ হয়৷ সেই ১৮০০ সাল থেকে লাইব্রেরিটিতে নতুন নতুন বই যোগ হচ্ছে৷
ওয়াশিংটনে গুটেনব্যার্গ
লাইব্রেরি অফ কংগ্রেসের একটি দুর্লভ, ৪২-লাইন গুটেনব্যার্গ বাইবেল রয়েছে৷ গোটা বিশ্বে এটির মাত্র পাঁচটি কপি রয়েছে৷
নিজের বই নিজেই ছাপানো
ওয়াশিংটন ডিসির ডুপোন্ট সার্কেলে অবস্থিত ক্রামার বুকসে কাজ করেন অলিভিয়া ইয়াব্লোনস্কি৷ এই মুহূর্তে তাঁর প্রিয় বই হচ্ছে সায়েন্টেফিক ফিকশন থ্রিলার ‘দ্য মার্টিন৷’ অথচ এই বইটি প্রকাশের জন্য কোন প্রকাশক না পেয়ে শেষ অবধি লেখক নিজেই সেটি ছেপেছিলেন৷ এখন অবশ্য বইটির চাহিদা অনেক৷
কাগজেই বইয়ের ভালো দিক
প্রযুক্তির কারণে কাগজেই বই এখন গুরুত্ব হারাচ্ছে৷ তবে সবক্ষেত্রে নয়৷ এই যেমন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ক্যামি আলিসি তাঁর ক্লাসের জন্য শুধু কাগজেই বই পড়েন৷ কেননা এতে করে বইটিতে লেখা যায়, নোট নেয়া যায় এবং প্রয়োজনীয় অংশ মার্ক করা যায়৷