‘কর্নাটকে খ্রিস্টানদের ওপর হামলায় হিন্দুত্ববাদীরা দোষী নয়’
২৮ জানুয়ারি ২০১১বিচারপতি সোমশেখারা আজ তাঁর তদন্ত রিপোর্ট তুলে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার হাতে৷ রিপোর্টে বলা হয়, হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি, মূলধারার হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সঙ্ঘপরিবার, রাজনীতিবিদ কিংবা রাজ্য সরকার হামলার ঐসব ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল না৷ বলা হয়েছে, হিন্দুধর্মকে হেয় করে ধর্মান্তরকরণের বিষয়ে যেসব পুস্তিকা প্রচার করা হয়েছিল, সেটাই ছিল এর নেপথ্যের মূল কারণ৷ এতে প্ররোচিত হয়ে কিছু বিপথগামী খ্রিস্টান-বিরোধি মৌলবাদী দুষ্কৃতি এই কাজ করেছে৷ যাদের কোন নাম বা পরিচয় নেই৷ সব হামলা তাৎক্ষণিক নয়৷ কিছু ঘটনা পূর্ব-পরিকল্পিত৷ হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের যোগসাজস ছিল, খ্রিস্টানদের এই অভিযোগ সত্য নয়৷ তবে আক্রান্ত খ্রিস্টানদের প্রতি পুলিশ প্রশাসনের আচরণে সহানুভূতির অভাব ছিল বলে বলা হয় তদন্ত রিপোর্টে৷ বিচারপতি সোমশেখারা বলেন, ১৫০০ পিটিশন জমা পড়েছিল, তারমধ্যে ৮০০টি পিটিশন খতিয়ে দেখা হয়েছে৷
এই রিপোর্টে সবাইকে ‘নির্দোষ' বলায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হতাশা ব্যক্ত করে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সবাই জানে খ্রিস্টান ও নিরপরাধ মানুষের ওপর কীভাবে হামলা হয়৷ তার জন্য কাউকেই গ্রেপ্তার বা অভিযুক্ত করা হয়নি৷ আমরা অখুশি কারণ খ্রিস্টানদের প্রতি এটা অবিচার৷ অপর খ্রিস্টান প্রতিনিধির প্রতিক্রিয়া, রিপোর্টে কেউ দোষী নয়, দায়ী নয় অথচ মিডিয়ার সচিত্র রিপোর্টে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ ছিল কিন্তু কমিশন তা দেখেও দেখেননি৷
কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, আমাদের রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন৷ এ বিষয়ে কোন সম্প্রদায়ের মনে যেন কোন আশঙ্কা না থাকে৷
কর্নাটক রাজ্যের ৮টি জেলায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, চার্চ ও প্রার্থনাস্থলে ভাঙচুরের একের পর এক ঘটনা ঘটে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে৷ পুলিশ ও প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংখ্যালঘুদের মনে দেখা দেয় আতঙ্ক৷ নাগরিক সমাজের চাপের মুখে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন সরকার৷ গঠিত হয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সোমশেখরার নেতৃত্বে একজনের তদন্ত কমিশন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়