কম্পিউটারের পর এবার জ্বালানির জগতেও বিপ্লব আনতে চান বিল গেটস
২৪ মার্চ ২০১০উন্নয়নের জন্য জ্বালানির প্রয়োজন৷ এদিকে জ্বালানির বেড়ে চলা ব্যবহার জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবের অন্যতম কারণ৷ তাহলে কি পরিবেশের স্বার্থে অনগ্রসর এলাকায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত? না, বিল গেটস'এর জবাব তা নয়৷ তিনি পরিবেশের ক্ষতি না করে সুলভে জ্বালানি উৎপাদন করতে চান৷ জাপানের বহুজাতিক তোশিবা'র সঙ্গে একযোগে তিনি ‘টেরাপাওয়ার' নামের এক প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত করতে চান৷ এই উদ্যোগের আওতায় এমন ‘মিনি' পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে, যা বিশ্বের জ্বালানি সমস্যার সমাধান করবে বলে দাবি করা হচ্ছে৷
প্রস্তাবিত এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্য কী? এই ‘ট্রাভেলিং ওয়েভ রিয়্যাক্টর'এর মধ্যে যে উপাদান থাকবে, তা কয়েক দশক ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যাবে৷ এই চুল্লি চালু রাখতে অতি সামান্য পরিমাণ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হবে৷ এমনকি কোন রক্ষণাবেক্ষণেরও নাকি প্রয়োজন হবে না৷ অতএব সাধারণ পরমাণু চুল্লির ক্ষেত্রে পরমাণু আবর্জনা ফেলার যে সমস্যা রয়েছে, এক্ষেত্রে তাও থাকবে না৷ ছোট আকারের এই চুল্লির জন্য বেশি জায়গারও প্রয়োজন হবে না৷ এর নিরাপত্তা নিয়েও বেশী চিন্তা করতে হবে না৷ ‘টেরাপাওয়ার' ব্যাপক আকারে এমন ‘মিনি' পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করার উদ্যোগ শুরু করছে৷
এমন সহজ এক পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ধারণা কিন্তু নতুন নয়৷ কাগজে-কলমে এমন প্রযুক্তির কথা বহুকাল ধরেই জানা ছিল৷ কিন্তু গবেষণাগারে ‘সিমুলেশন'এর বাইরে আজ পর্যন্ত এমন একটি কেন্দ্রও গড়ে তোলা সম্ভব হয় নি৷ এমনকি ‘টেরাপাওয়ার'ও বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে শুধু এক সুপার-কম্পিউটারের মাধ্যমে ‘ট্রাভেলিং ওয়েভ রিয়্যাক্টর'এর একটা রূপরেখা সৃষ্টি করতে পেরেছে৷ এই মডেল অনুযায়ী ৫০ থেকে ১০০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রায় ১০০ কোটি ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে৷
বিল গেটস – এই নামের সঙ্গে এতকাল শুধু সাফল্য জড়িয়ে রয়েছে৷ এবারেও কি তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন তিনি?
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই