কবরখানার জাদু
কবরখানায় পাওয়া যায় একটা শহর বা দেশের অতীত, তার মনীষীদের কাহিনী আর সেই সঙ্গে একটা অদ্ভুত পরিবেশ৷ এ কারণে জার্মানি বা ইউরোপের অনেক কবরখানা পর্যটকদের টানে৷
রোম্যান্টিক: প্যারিসের প্যার লাশেইজ কবরখানা
এখানে অস্কার ওয়াইল্ড, ইউজিন দেলাক্রোয়া, মারিয়া কালাস, এডিথ পিয়াফ, ফ্রেডেরিক শোপ্যাঁ, জিম মরিসনের মতো শিল্পীরা চিরনিদ্রায় শায়িত৷ গাছের ছায়ায় ঢাকা একটি নিরাভরণ অথচ রোম্যান্টিক পরিবেশ, যা মানুষকে টানে প্যারিসের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত এই পৃথিবী বিখ্যাত কবরখানাটিতে৷
ভ্যাটিকানের কাম্পো সান্তো টয়টোনিকা
জার্মান আর ফ্লেমিশ ভাষী মানুষদের কাছে খুবই প্রিয় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স গির্জার ঠিক পাশে পাম গাছ, কেপারের মুকুল আর করবী ফুলের ঝাড় লাগানো এই কবরখানাটি৷ কবরখানার মাটি আর দেয়ালের প্রতিটি ইঞ্চি কবরে ঢাকা৷ অনেক কবরের উপর যিশুখ্রিষ্টের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার কাহিনী থেকে নানা দৃশ্য পাথরে খোদাই করা আছে৷
মিলানের চিমিতোরো মনুমেন্তালে
গ্রিক টেম্পল, মিশরীয় পিরামিড, বিশ মিটারের বেশি উঁচু ওবেলিস্ক স্তম্ভ- এ সব মিলিয়ে মিলানের সিমিতেরো মনুমেন্তালে বা ‘বিশাল কবরখানার’ নাম সার্থক৷ এখানে যাঁদের সমাধি তাঁরা যে বিত্তবান ছিলেন, সেটা মরণের পরেও বোঝা যায়৷ ইটালির সবচেয়ে সুন্দর ও চমকদার কবরখানাগুলির মধ্যে গণ্য হয় এই সিমিতেরো মনুমেন্তালে৷ দু’লাখ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে কবরখানাটি খোলা হয় ১৫০ বছর আগে, ১৮৬৬ সালে৷
জীবনকে যারা ভালোবাসতেন: কোলোনের মেলাটেন কবরখানা
মধ্যযুগে স্থানটি ছিল বধ্যভূমি, আজ সেখানে প্রায় ৫৫,০০০ কবর৷ তার মধ্যে আছে ‘লাখপতিদের গোরস্তান’, যেখানে ওডিকোলোন যাদের আবিষ্কার, কোলোনের সেই ফারিনা পরিবারের কবরও আছে৷ অন্যদিকে কার্নিভালের সং দেওয়া কবরও পাওয়া যাবে৷
হামবুর্গের ইহুদি কবরখানা
কবরখানাটির বিশেষত্ব হলো এই যে, নাৎসি আমলের বিভীষিকা সত্ত্বেও এখানকার প্রায় নয় হাজার প্রস্তরফলকের মধ্যে ছয় হাজার এখনও অক্ষত আছে৷ চারশ’ বছরের পুরনো এই কবরখানাটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বলে ঘোষণা করার কথা বিবেচনা করছে ইউনেস্কো৷
হামবুর্গের ওহল্সডর্ফ কবরখানা
এলাকার হিসেবে বিশ্বে চতুর্থ: ৯৬৬ হেক্টর৷ বছরে প্রায় বিশ লাখ মানুষ আসেন এখানকার স্মৃতিসৌধ, জলাশয়, ভাষ্কর্য আর গোরদান সংক্রান্ত মিউজিয়ামটি দেখার জন্য৷ ১৮৭৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত এখানে প্রায় ১৪ লাখ মানুষকে সমাধিস্থ করা হয়েছে৷ কবরের সংখ্যা প্রায় দু’লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার, তার মধ্যে সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর হেলমুট স্মিটের কবরও আছে৷
সংগীতপ্রেমীদের জন্য ভিয়েনার কেন্দ্রীয় কবরখানা
মোৎসার্ট, বেটোফেন, ব্রাম্স, স্ট্রাউস আর শুবার্টের মতো সুবিখ্যাত সংগীতস্রষ্টা এখানে শায়িত৷ খোলা হয় ১৮৭৪ সালে৷ এখানকার তিন লাখ ত্রিশ হাজার কবরের মধ্যে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটারের পথ আছে৷