1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কনকর্ড দুর্ঘটনার ১০ বছর পর শুরু হল বিচার

২ ফেব্রুয়ারি ২০১০

প্যারিসে কনকর্ড দুর্ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর মঙ্গলবার অভিযুক্তদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ফরাসি আদালত৷

https://p.dw.com/p/LpTV
কনকর্ড আজ অতীত স্বপ্নছবি: AP

ওই দুর্ঘটনায় ১১৩ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কন্টিনেন্টাল এয়ারলাইন্সসহ মোট পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে আদালতে৷ অভিযুক্তরা আসলেই দোষী কি না তা প্রমাণের পাশাপাশি দুর্ঘটনার বিষয়ে ফরাসি তদন্ত প্রতিবেদনের যথার্থতাও খতিয়ে দেখবে আদালত৷

২০০০ সালের ২৫শে জুলাই কনকর্ড দুর্ঘটনায় নিহত ১১৩ জনের নাম পড়ে শোনানোর মধ্য দিয়েই মঙ্গলবার শুনানি শুরু হয় ফরাসি আদালতে৷ রাজধানী প্যারিসের অদূরে পঁতোয়াস শহরের ওই আদালতে শুনানির শুরুতেই বিচারক বলেছেন, এই মামলার আইনি তদন্ত ‘কঠিন এবং অনেক কারিগরি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল’৷ বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে বলেও জানান তিনি৷

ইতিহাস

প্রায় ১০ বছর আগে প্যারিসের শার্ল দ্য গোল বিমানবন্দর থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে উড্ডয়নের পরপরই কনকর্ডটি বিধ্বস্ত হয়ে ১০০ জন যাত্রী এবং ৯ জন ক্রুর সবাই নিহত হন৷ এছাড়াও আগুনে জ্বলতে থাকা অবস্থায় যে হোটেলের দালানে তা ভেঙে পড়ে সেখানে মারা যান আরও ৪ জন৷ নয় ফরাসি ক্রু ছাড়া যাত্রীদের প্রায় সবাই ছিলেন জার্মানির পর্যটক৷ ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজের প্রমোদ ভ্রমণে যোগ দিতে তারা দলবেঁধে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছিলেন৷

এ মামলার আসামী করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘কন্টিনেন্টাল এয়ারলাইন্স’ এবং সংস্থাটির একজন ওয়েল্ডার জন টেইলর ও তার সুপারভাইজার স্ট্যানলি ফোর্ডকে৷ ফরাসি অংশে অভিযুক্ত হয়েছেন এয়ার ফ্রান্সের কনকর্ড প্রকল্পের তৎকালীন প্রধান পরিদর্শক অঁরি পেরিয়ে ও প্রধান প্রকৌশলী জাক এরুবেলকে৷ এছাড়া ষষ্ঠ আসামী হলেন ফ্রান্সের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তৎকালীন প্রধান ক্লোদ ফ্রানৎসেন৷

দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৭৫ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে এবং কন্টিনেন্টাল এয়ারলাইন্সকে ৩,৭৫,০০০ ইউরো জরিমানা করা হতে পারে৷

তদন্তের ফলাফল

দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ২০০৪ সালে ফরাসী তদন্ত কমিশন এই সিদ্ধান্তে আসে যে, কনকর্ডের উড্ডয়নের ঠিক আগে আগে কন্টিনেন্টাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান থেকে রানওয়েতে খসে পড়া একটা অত্যন্ত শক্ত টাইটেনিয়ামের পাত ওই দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ি৷ উড্ডয়নের সময় ওই ধাতব পাতের ওপর দিয়ে গেলে কনকর্ডটির একটি টায়ার বিস্ফোরণ হয়ে একটি জ্বালানি ট্যাংকে আগুন লেগে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়৷

শব্দের দ্বিগুণ গতিতে উড়তে সক্ষম কনকর্ড ছিল সাধারণ বিমান থেকে অনেক আলাদা৷ তৈরি হয়েছিল মাত্র ২০টি বিমান৷ এর মধ্যে ছয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা ও উন্নয়নের জন্য এবং বাকী ১৪টি বিমান বাণিজ্যকভাবে চলাচল করছিল এয়ার ফ্রান্স ও ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের হয়ে৷

১৯৭৬ সালে কনকর্ড প্রথম আকাশে ওড়ে৷ এ দুর্ঘটনার পর প্রায় বছরখানেক চলেনি কোনো কনকর্ড৷ পুনরায় চালু হলেও ২০০৩ সালেই চিরতরে শেষ হয় এর যাত্রা৷ আর এর মধ্য দিয়েই শেষ হয় বিশ শতকের প্রকৌশলী উৎকর্ষতার প্রতীক এবং আধুনিক ফ্রান্সের অন্যতম গর্ব কনকর্ডের ইতিহাসও৷

প্রতিবেদক : মুনীর উদ্দিন আহমেদ, সম্পাদনা : সঞ্জীব বর্মন