1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেট আইন কঠিন হলো

৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

তুরস্কে ইন্টারনেট সংক্রান্ত আইন কঠোর করেছে সেদেশের সরকার৷ বুধবার রাতে আইনটি অনুমোদন হয়৷ এই আইনে ইন্টারনেটের ওপর নজরদারির ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে দেশটির টেলিযোগাযোগ বিভাগকে৷

https://p.dw.com/p/1B3Zr
ছবি: picture-alliance/dpa

ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে বুধবার রাতে পার্লামেন্টে কয়েক ঘণ্টা তুমুল বিতর্ক হয় সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে৷ পরে ৫৫০ সদস্যের মধ্যে ৩১৯ জন এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন৷ পার্লামেন্টে বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, এই আইনটি এক ধরনের ‘সেন্সরশিপ'৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের ক্ষমতাসীন জাস্টিস এবং ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তাদের প্রতিরোধ ধোপে টেকেনি৷

এই আইনের ফলে কোনো ব্যক্তি কাউকে অসম্মান করলে বা ব্যঙ্গ করলে আদালতের নির্দেশ ছাড়াই ইন্টারনেট সুবিধা বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা থাকছে সরকারি সংস্থা টেলিকমিউনিকেশনস কমিউনিকেশনস প্রেসিডেন্সি ‘টিআইবি'-র৷ এমনকি অবাধ নজরদারির ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে টিআইবিকে৷

ইস্তানবুলের বিলগি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ইয়ামান আকদেনিজ জানান, টিআইবিকে এই ক্ষমতা দেয়া ‘অরওয়েলিয়ান', অর্থাৎ মুক্ত চিন্তা ও বাক স্বাধীনতার লঙ্ঘন৷ আকদেনিজ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে আরো জানান, টিআইবি-র যদি মনে হয় কোনো ব্যক্তি এমন কোনো ছবি বা পোস্ট দিয়েছেন যা অন্যের জন্য অসম্মানজনক, তবে ঐ ব্যক্তি যে কোম্পানির গ্রাহক তাকে অনুরোধ করা হবে অন্তত দুই বছরের জন্য তাঁর সমস্ত সেবা বন্ধ করে দিতে

Erdogan in Berlin
প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানছবি: picture-alliance/dpa

তিনি একথাও জানান যে, এই আইন বাস্তবায়নের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইন্টারনেট নীতির শর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে তুরস্ক, আর চীনের দিকে একধাপ এগিয়ে যাবে৷ কেননা চীনেও একই ধরনের ইন্টারনেট নীতি বহাল আছে৷

তুরস্কের বিরোধী দলের নেতা হাসান ওরেন এর্দোয়ানকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, এর্দোয়ান যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন বলেছিলেন তুরস্কে গণতন্ত্রের বিস্তার ঘটাবেন, কিন্তু তার বদলে তিনি দেশে ফ্যাসিবাদ চালু করছেন৷ তাঁর মনে রাখা উচিত হিটলার যখন ক্ষমতা পেয়েছিলেন, তখন তিনি একই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন৷

তবে ২০০৭ সাল থেকেই তুরস্কে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ শুরু হয়৷ ব্যক্তিগত নীতির লঙ্ঘণ করায় তখন ব্লগিং টুল ওয়ার্ডপ্রেস এবং ভিডিও শেয়ারিং সার্ভিসেস ডেইলিমোশন এবং ভিমিও আদালতের নির্দেশে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল৷

ইউরোপের অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড করপোরেশন বা ওএসসিই জানিয়েছে, টিআইবিকে এই নতুন ক্ষমতা দেয়ার অর্থ কোনো রকম আইনগত বাধ্যবাধ্যকতা ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হবে তারা৷ যেখানে ব্যবহারকারীরা কেউই জানতে পারবেন না, কখন কিভাবে তাঁদের তথ্য সরকারের হাতে গেল৷

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, এটা কোনো ইন্টারনেট সেন্সরশিপ নয়৷ অন্য অনেক দেশের তুলনায় তাদের দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে এবং তারা মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী৷

তবে ইন্টারনেট বিষয়ক এই নতুন আইনের ফলে তুরস্কে মত প্রকাশ ও বাক স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আরো বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের৷

এপিবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য