ওবামার আমন্ত্রণে ওয়াশিংটনে সমবেত বিশ্ব নেতৃবৃন্দ
১৩ এপ্রিল ২০১০পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব
১৯৪৫ সালের পর কোন রাষ্ট্রপ্রধানের উদ্যোগে এতবড় আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন এই প্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালের আন্তর্জাতিক সম্মেলনটিও হয়েছিল তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্টের আহ্বানে, জাতিসংঘ গঠন উপলক্ষে৷ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ওয়াশিংটনের কনভেনশন সেন্টারে একে একে আগত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের স্বাগত জানান৷ এসময় তিনি সরাসরি বৈঠক করেন চীন, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে৷ বিশ্বের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর হাতে যাতে পরমাণু অস্ত্র যেতে না পারে তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ এই ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রের নানা উপাদান ছড়িয়ে পড়েছে৷ তাই এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো, পরমাণু অস্ত্রের উপাদানগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা৷'
টার্গেট ইরান
তবে সম্মেলনে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পেতে যাচ্ছে তা হলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচী৷ বলাই বাহুল্য, ইরানকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ সম্মেলনে পরমাণু অস্ত্র সম্প্রসারণ নিষিদ্ধ করা ছাড়াও পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম এমন বেসামরিক তৎপরতাও নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আসবে৷ এবং সে প্রসঙ্গে ইরানের পরমাণু কর্মসূচীও তালিকায় থাকছে৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমা বিশ্বের সন্দেহের জবাবে ইরান দাবি জানিয়ে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচী বেসামরিক কাজের জন্য৷
চীনের সম্মতি আদায়ে চেষ্টা
এদিকে সোমবার চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এর সঙ্গে ওবামার বৈঠকটি বেশ গুরুত্ব পায়৷ দুই নেতাই এসময় পরমাণু ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার পক্ষে মত দেন৷ যদিও বৈঠক শেষে দুই দেশের পক্ষ থেকে দুই ধরণের বক্তব্য এসেছে৷ হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা জেফ বাডের জানিয়েছেন যে ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে চীন৷ অন্যদিকে চীনা দলের মুখপাত্র মা ঝাসু বলেন, চীন আশা করে যে ইরানের পরমানু কর্মসূচীর ব্যাপারে সুরাহা করতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো কূটনৈতিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে৷
এদিকে সম্মেলন শুরু হবার কিছু আগে ইউক্রেন ঘোষণা দেয় যে তারা আগামী বছরের মধ্যে তাদের সকল সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলবে৷ ইউক্রেনের এই ঘোষণা সম্মেলনের লক্ষ্যকে আরও জোরালো করে তুলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা