ওজন বাড়ানোর কিছু উপায়
বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষের শরীরের ওজন বেশি হলেও এমন রোগা পাতলা মানুষও অনেক আছেন যারা ওজন বাড়াতে খুবই আগ্রহী৷ তাদের কথা ভেবেই ওজন বাড়ানোর কিছু উপায় দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
বেশি রোগা-পাতলা
অনেকেই আছেন ভীষণ রোগা-পাতলা, বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় ওজন অনেক কম৷ এজন্য তো তাদের কষ্ট আছেই আর সে কষ্টকে আরো বাড়িয়ে দেয় অনেকে – অপুষ্ট, রুগ্ন, কাঠির মতো শুকনো, শীর্ণ ইত্যাদি মন্তব্য করে৷ যদিও পাতলা মানুষরা এতো রোগা থাকার জন্য নিজেরা দায়ী নয়৷ তাছাড়া অনেক মোটা মানুষের তা ঈর্ষার কারণও হয়!
জেনেটিক
জার্মানির লাইপশিস শহরের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়েন্স পুটসিগারের মতে, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেনেটিক কারণেই মানুষ এতো বেশি রোগা হয়ে থাকে৷ এমন মানুষও আছেন যাঁরা খুবই কর্মঠ, নিয়মিত খেলাধুলা করেন এবং যথেষ্ট এনার্জি আছে তারপরও তাঁরা বেশি খাওয়া-দাওয়া করেন না, তাঁদের খেতে ইচ্ছে হয় না৷’’
মডেলদের অনুকরণ
‘‘তরুণীরা না খাওয়ার সমস্যায় বেশি ভোগে’’ এর কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলে এক সমীক্ষায় জানা গেছে৷ সমীক্ষাটি করেছে অ্যামেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা৷ জানা গেছে, ফেসবুক বা অন্যান্য গণমাধ্যমে সুন্দরী পাতলা বান্ধবী বা অন্যান্য তরুণীদের ছবি দেখে তারা সেরকম হতে চায়, আর তা থেকেই নাকি খাওয়ার আগ্রহ কমে যায়৷
ডাক্তারি চেকআপ
আপনাদের মধ্যে যাঁদের ওজন সত্যিই খুব কম তাঁরা চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জেনে নিন তাদের থাইরয়েডের কোনো সমস্যা, কিংবা পেটের বা হজমের সমস্যা আছে কি না? তাছাড়া মানসিক কোনো সমস্যা বা বিষন্নতাও ওজন বাড়াতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে৷
সতর্কতা
যাদের ওজন খুব কম কিন্তু শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, ডাক্তারি চেকআপে সুস্থ তাদেরও ভয়ের কারণ থাকতে পারে৷ কারণ দিনের পর দিন কম খাওয়ায় শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন না ঢোকায় শরীর আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে৷ ফলে বিপাক ক্রিয়ার সমস্যা হতে পারে, যা নিয়মিত ক্লান্তবোধের কারণ হতে পারে৷ শরীরে গ্লোবিন, হরমোন, এনজাইম, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির অভাবে হাড়ের ক্ষয়রোগও হতে পারে, অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে৷
আরো বেশি প্রোটিন, আরো চর্বি
খাবারের তালিকায় নিয়মিত ডিম, দুধ, মাংস, ডিম, মুরগি থাকতে হবে৷ তাছাড়া ডিম সেদ্ধর বদলে ডিম ভাজি এবং সব খাবারেই আগের তুলনায় একটু বেশি চর্বি বা ফ্যাট দেয়া যেতে পারে৷ সালাদ, সবজি বা আলু ভাজিতে অবশ্যই অলিভ অয়েল বা অন্য তেলের পরিমাণ একটু বেশি থাকতে পারে৷ তাছাড়া খাবারের পরিমাণও আগের তুলনায় একটু বাড়াতে হবে৷ খাবারে যেন যথেষ্ট আঁশ থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন৷
খাওয়া-দাওয়ায় পরিবর্তন
যাঁরা ওজন বাড়াতে চান, তাঁরা খাবার টেবিলে রঙিন খাবার রাখুন তাহলে খাওয়ায় রুচি ও আগ্রহ বাড়বে৷ খাবারগুলো একটু ধনে পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি দিয়ে একটু সাজিয়ে নিন৷ তাছাড়াও সর্ষে আর আদার ব্যবহার বাড়িয়ে দিন৷ আদা পেটের উদ্দীপক, রুচি বাড়াতেও সহায়তা করে৷ খাবার আগে স্যুপ খেতে পারেন, সালাদ বা সবজিতে সামান্য বাদাম ছেড়ে দিতে পারেন৷ খাবারে প্রোটিন এবং চর্বি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ডা: পুটসিগার৷
একটু ধৈর্য্য ধরে নিয়ম মেনে চলুন
খাওয়া-দাওয়ায় পরিবর্তন এনে নিয়মমতো এবং একটু খেয়াল করে প্রয়োজনীয় সবকিছুই একটু বেশি করে খেলে ছয়মাসের মধ্যে শরীরের ওজন দুই থেকে চার কেজি বাড়ার কথা৷