ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
সিরিয়ার পালমিরা শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো প্রায় ২০০০ বছরের পুরনো৷ এর আগে আইএস ইরাকের অনেক ঐতিহাসিক প্রাচীন নিদর্শন ধ্বংস করেছে৷ এবার পালমিরার বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা স্থাপনাগুলো ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা করছে ইউনেস্কো৷
মরুদ্যানের ধ্বংসাবশেষ
সিরিয়ার মরুভূমির ঠিক মধ্যাঞ্চলে পালমিরার ধ্বংসাবশেষ৷ এই সিল্ক রোড ধরেই উটের কাফেলা চলত৷ এ এলাকাটি ছিল সম্পদ ও বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল৷ সুবর্ণ সময় চলে গেছে এবং পুরো শহর এখন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে৷ ১৯৮০ সালে এলাকাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়৷
বা’আল মন্দির
খ্রিস্টের জন্মের পর প্রথম শতকে পালমিরার অধিবাসীরা বা’আল দেবতার জন্য এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন৷ এরপর থেকে এটি পালমিরার মানুষের ধর্মীয় জীবনযাপনের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়৷ চতুর্দশ শতাব্দীতে পালমিরা রোমান সাম্রাজ্যের আওতাভুক্ত হয়৷ বুলেটের আঘাতে মন্দিরের দেয়াল এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
হাদ্রিয়ানস আর্ক
দ্বিতীয় শতকে নির্মিত এই বারান্দাটির দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটারের বেশি৷ মসলা, সুগন্ধি, রত্ন এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ এদিক দিয়েই সরবরাহ হতো৷ রোমান সম্রাট হাদ্রিয়ানের নামানুসারে এর নাম হাদ্রিয়ানস আর্ক বা হাদ্রিয়ানের ধনুক৷
রোমান মনুমেন্ট
দুই রাস্তার সংযোগস্থলে ‘টেট্রাপাইলন অফ পালমিরা’ নামের এই স্তম্ভটি অবস্থিত৷ আসওয়ানের খনি থেকে লাল গ্রানাইট পাথর এনে এটি তৈরি করা হয়েছিল৷ এর চার স্তম্ভের মধ্যে এখন একটি ছাড়া বাকিগুলো রেপ্লিকা বা নকল৷
পবন দেবতা
বারসামিনকে বলা হয় পবন দেবতা৷ পালমিরার অধিবাসীদের কাছে অত্যন্ত পূজনীয় দেবতা তিনি৷ তবে মন্দিরটি ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিল তা জানা যায়নি৷ ধারণা করা হয়, ফিনিশিয়রা যখন এই এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিল, সে সময় নির্মিত হয় এটি৷
প্রাচ্যের নাট্যমঞ্চ
গ্রিক-রোমান সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া যায় পালমিরায়৷ আছে একটি বারান্দা, থার্মাল স্নানাগার এবং একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার৷ এখানে প্রাচ্যের অনেক নাটক মঞ্চস্থ হতো৷ এছাড়া গ্ল্যাডিয়েটর এবং প্রাণীদের মধ্যে লড়াইও হত এখানে৷
সমাজের উচ্চ পদস্থদের ফোরাম
এখানে একসময় ২০০টি মূর্তি ছিল৷ সেই মূর্তি বা স্ট্যাচুগুলো তাদের, যারা একসময় দেশের সিটি কাউন্সিলের উচ্চপদে ছিলেন৷ এখানে সিটি কাউন্সিলের বৈঠক হত৷
অলংকৃত কবর
শহরের ফটকের ঠিক বাইরেই বেশ কয়েকটি কবরস্থান রয়েছে৷ কোথাও কোথাও একই বংশের কয়েক প্রজন্ম একই কবরস্থানে শায়িত আছেন৷ সেই কবরস্থানগুলোর কয়েকটির উপরে আছে লম্বা টাওয়ার৷ আবার কিছু কবর খুব সুন্দর করে সাজানো৷
আসন্ন ধ্বংসের আশঙ্কা
খ্রিস্টের জন্মের ৩০০ বছর আগে আধুনিক সামরিক স্থাপনা সমৃদ্ধ শহরটিতে রাজত্ব করেছেন অনেক শাসক৷ এখন ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের দখলে এর কিছু অংশ৷ তাই ইউনেস্কো এই ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত৷