২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ভোররাতে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি৷ এই তিন বছরে নিহতের পরিবার, শুভানুধ্যায়ী আর সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারেনি হত্যাকাণ্ডের কারণ৷ কেন?
কামরুল হুদা লিখেছেন, ‘‘ডয়েচে ভেলের এই বিশেষ প্রতিবেদনটি আমার খুব ভালো লেগেছে৷ তবে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার কখনো আমরা পাবো বা৷ এ সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে ৪৯ ঘণ্টা কেন ৪৮ বছরেও এ মামলার বিচার হবে না৷ আসলে এই দিনটি যখন আসে, একমাত্র তখনই সরকারের চামচারা সাগর-রুনির পরিবারে সদস্যদের আশা দেন যে এই হত্যার বিচার হবে৷''
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
ফেসবুক আহ্বানে সমবেত সবাই
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তিতে মঙ্গলবার খুনিদের বিচার চেয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়৷ একটি ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে সাগর-রুনির বন্ধু, সহকর্মীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন৷
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
প্রতীকী প্রতিবাদ
খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয়াদের অনেকের মুখ ছিল কালো কাপড় বাঁধা৷ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এটা করেন তাঁরা৷
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
সার্ক ফোয়ারা ঘিরে অবস্থান
সাংবাদিক দম্পতির খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে সার্ক ফোয়ারা ঘিরে অবস্থান করেন প্রতিবাদকারীরা৷ বলাবাহুল্য, হত্যাকাণ্ডের পর দু’বছর পেরিয়ে গেলেও আজও হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে কিংবা প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী৷
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
‘জানতে চাই, বিচার চাই’
মানববন্ধনে অংশ নেয়া এক ব্যক্তির হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড লেখা, ‘‘কার ছায়ায়/কার মায়ায়/সাগর-রুনির খুনি? জানতে চাই/বিচার চাই৷’’
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
দীর্ঘতম ৪৮ ঘণ্টা!
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর-রুনি খুন হওয়ার পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে৷ কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা আজও শেষ হয়নি বলে মনে করেন প্রতিবাদকারীরা৷ কেননা, সাগর-রুনির খুনিরা আজও গ্রেপ্তার হয়নি৷
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
‘সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’
এদিকে, সাগর-রুনির পরিবারের উদ্যোগে ঢাকার দৃক গ্যালারিতে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়৷ এই প্রদর্শনীতে লেখা রয়েছে, ‘‘আসুন আমরা সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’’৷ লেখাটি পড়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘কতটা দুঃখ আর হতাশা থেকে এই লেখা তা আমাদেরও বুঝতে হবে৷’’
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’
‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’ শিরোনামের চিত্র প্রদর্শনীটি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার আয়োজন করা হলো৷ সাংবাদিক দম্পতির পরিবারসহ সাংবাদিক নেতারা বারবার হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে আসলেও নিরাপত্তা বাহিনী এখনো প্রকৃত খুনিদের ধরতে পারেনি৷
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
‘আন্দোলন থামিও না’
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মুনীর বলেন, ‘‘আন্দোলন থামিও না, যত সাংবাদিক মারা গেছে সবার বিচারের দাবিতে তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও৷ আমার মেঘের জন্য আমি বিচার চাই৷’’
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
‘সরকার আন্তরিক’
গত দুই বছরে খুনিরা গ্রেপ্তার না হলেও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘‘রহস্য উদঘাটনে সরকার আন্তরিক৷’’
-
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
পেরিয়ে গেল দুই বছর
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নিজেদের ভাড়া বাসার বেডরুমে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি৷ সেসময় একই বাসায় অবস্থান করলেও প্রাণে বেঁচে যায় সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র সন্তান মেঘ৷
লেখক: মুস্তাফিজ মামুন, ঢাকা / আরাফাতুল ইসলাম, বন
বন্ধু খানের মন্তব্য, ‘‘সরকারের ভিতরই খুনিরা নিরাপদে রয়েছে৷''
মো. ইউসুফ আলি সাইমনের বক্তব্যও একইরকম৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘এই সরকার থাকলে নির্দোষ মানুষের বিচার হবে না!!!''
মির্জা সোহেল কটাক্ষ করে লিখেছএন, ‘‘কি দরকার? ক্ষমতার মসনদ দখল করার জন্য যতটুকু আন্দোলন করা প্রয়োজন তা তো করা হয়েছেই...৷''
জুয়েল সাদিকের কণ্ঠে উঠে এসেছে তিরস্কারের সুর৷ তাঁর কথায়, ‘‘আরে এখানে তো জামাত আর হুজুররা নাই যে তাড়াতাড়ি বিচার হবে...৷''
দেলওয়ার খান লিখেছেন, ‘‘এই শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যদি সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাওয়া হয়,
তাহলে সেটা হবে খুব বড় বোকামি...৷''
সাইমা জামানের কথায়, ‘‘কে হত্যা করেছে এটা দেশের সবাই জানে৷ কিন্তু এর বিচার হবে না৷ তাই এই সরকারের আমলে গলা ফাটিয়ে লাভ নেই৷''
অমর ফারুক চঞ্চলের ভাষায়, ‘‘সরকার আছে বিরোধী দল নিয়ে, ও সব দেখার সময় নেই তাদের৷''
উল্লেখ্য, এই হত্যার রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাইকোর্টের নির্দেশেই ২০১২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি মামলাটি পুলিশ থেকে ব়্যাবের হাতে দেয়া হয়৷ ব়্যাব তদন্তের দায়িত্ব নেয়ার পর, সন্দেহভাজন ১৬ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়৷ এছাড়া আলামত হিসেবে জব্দ করা ছুরি ও পোশাকের নমুনাও পাঠানো হয় অ্যামেরিকায়৷ কিন্তু তাতেও হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি৷
ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ