এমন কফি কি পান করা যায়!
সৌন্দর্য বাড়াতে বড়োজোর একটা ডিজাইন, বা কখনও একটা তীরবিদ্ধ হৃদয়৷ কফিশিল্পের দৌড় এটুকুই৷ সেই শিল্পকে এবার অভাবনীয় উচ্চতায় নিয়ে গেছেন কোরিয়ার এক বারিস্তা৷ ফুটিয়ে তুলছেন ফান গখ, এডোয়ার্ড মুঙ্কের বিখ্যাত সব চিত্রকর্ম৷
কফিই যখন চিত্রকর্ম
কফির কাপে সাধারণ সব ডিজাইনে সবাই অভ্যস্ত৷ সাউথ কোরিয়ার বারিস্তা লি ক্যাং বিন চাইছিলেন বাড়তি কিছু করতে৷ কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই একসময় মাথায় আসলো এক বুদ্ধি৷ ম্যাড়মেড়ে ডিজাইন বাদ দিয়ে তাই হাতে নিলেন রং-তুলি৷ সিউলে খুলে বসলেন ক্যাফে সি থ্রু৷
অয়েল নয়, ক্রিম পেইন্ট
দেখে হয়ত মনে হতে পারে, এমন ঘটনা ঘটাতে না জানি কী প্রয়োজন৷ কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই তার উলটো৷ রং হিসেবে লি ক্যাং ব্যবহার করেন ফুড ডাই৷ কফিতে সে রং ছড়িয়ে দিতে, ছোট ছোট তুলি৷ ফলে ক্যাফেটিতে গ্রাহকদের আস্ত অয়েল পেইন্ট খাওয়ানো হচ্ছে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই৷
কফিতে ফান গখ
লি ক্যাংয়ের সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভিনসেন্ট ফান গখের (বানানভেদে ভ্যান গগ) ‘দ্য স্টারি নাইট’৷ ফ্রান্সের এক মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকার সময় বিখ্যাত ছবিটি আঁকেন এই ডাচ শিল্পী৷ পশ্চিমা সংস্কৃতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি মনে করা হয় স্টারি নাইটকে৷
কফির আর্তনাদ!
কেমন হবে যদি কফির কাপে ভাসতে থাকে আর্তনাদ করা এক মানুষের অবয়ব? এমনটাই করে দেখিয়েছেন লি ক্যাং৷ নরওয়েজিয়ান ইম্প্রেশনিস্ট এডোয়ার্ড মুঙ্কের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘দ্য স্ক্রিম’, কফিতে হুবহু ফুটিয়ে তুলতে পারেন ক্যাং৷
বাদ যাবে না কোনো কিছুই
ক্ল্যাসিক সব চিত্রকর্ম তো রইলোই, নানা চলচ্চিত্রের চরিত্র, এবং নিজের তৈরি রঙিন ডিজাইনও তৈরি করেন ক্যাং৷ কখনও তাঁর তুলিতে ফুটে ওঠে দ্য লিটল প্রিন্সের কার্টুন চরিত্র, কখনও পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ানসের ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো৷ আবার কখনও ইন্সটাগ্রামের লোগো৷
সবুরের মেওয়া
এক একটি অয়েল পেইন্টে চিত্রকরদের প্রয়োজন হয় দীর্ঘ সময়৷ কখনও মাস, কখনও বা সেটা বছর পেরিয়ে যায়৷ নিশ্চয়ই ভাবছেন, কফিতে সেই চিত্রকর্ম আঁকতে তাহলে কতটা সময় প্রয়োজন৷ মাত্র ১৫ মিনিট! সাধারণ কফির তুলনায় সময়টা একটু বেশি সময় লাগলেও, সবুরে মেওয়া তো ফলেই৷
প্রচারেই প্রসার
প্রচারই যদি না হলো, তবে এত কিছু করে লাভই বা কি? ক্যাং অবশ্য সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাননি৷ নিজের কফিশিল্পকে ছড়িয়ে দিতে আশ্রয় নিয়েছেন ইন্সটাগ্রামের৷ তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা এখন এক লাখেরও বেশি৷ তাছাড়া বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েও নিয়মিতই প্রশংসা কুড়াচ্ছে তাঁর সৃষ্টি৷
ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া
নতুন এই ধারণা চালুর পর থেকে ক্যাংয়ের ক্যাফেতে ভিড় বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ৷ অর্ডার নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাঁকে৷ প্রশংসায় পঞ্চমুখ ক্রেতাদের অবশ্য একটা অনুযোগও আছে৷ এমন সুন্দর কফি কি খাওয়া যায়? কিন্তু কিছু তো আর করার নেই৷ কফি তো আর বাসার দেয়ালে ঝোলানো যাবে না৷ অগত্যা…