1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চালিয়ে যান, পোপ!

আস্ট্রিড প্রাঙে/এসবি১০ জুলাই ২০১৫

নিজের জন্মভূমি ল্যাটিন অ্যামেরিকা সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিস মুখে কোনো রাশ টানছেন না৷ সেখানকার শাসক শ্রেণির বিবেক জাগিয়ে তোলার চেষ্টাও করছেন তিনি৷ এটিকে ইতিবাচক প্রবণতা বলেই মনে করেন আসট্রিড প্রাঙে৷

https://p.dw.com/p/1FwG4
Papst Franziskus in Bolivien
ছবি: Reuters/M. Bazo

হওয়ার কথা ছিল ধর্মীয় সফর৷ কিন্তু পোপ ফ্রান্সিস তেমনটা হতে দিলেন না৷ আসলে ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে তিনি কোনো বিভাজন হতে দেন না, সেটা চানও না৷ এটাই ল্যাটিন অ্যামেরিকার গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে৷ কারণ সেই অঞ্চলের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দেয় যে, রাজনৈতিক শিকড় ছাড়া ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে দৈনন্দিন বেঁচে তাকার সংগ্রামের মেলবন্ধন ঘটানো কঠিন৷ অবশেষে এই পোপ তাঁর প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতাসীন শ্রেণির বিবেক জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন৷ ইকুয়েডর, বলিভিয়া ও প্যারাগুয়ে – পোপ যে তিনটি দেশ সফর করছেন, সেখানে এর অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল৷

কূটনৈতিক, অথচ স্পষ্ট ভাষা

পোপ ফ্রান্সিস তাঁরা বার্তা জোরদার করতে অতীতের ক্ষত জাগিয়ে তুলছেন৷ গত শতাব্দীর সত্তর ও আশির দশকে সামরিক শাসনের যুগে পুরো ল্যাটিন অ্যামেরিকা একটা গণ কারাগারে পরিণত হয়েছিল৷ পোপ সেই কালো অধ্যায়ের উল্লেখ করেছেন৷

ইকুয়েডরের রাজধানী কিটো-তে সমাজ ও রাজনীতি জগতের বিশিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় পোপ বলেন, ‘‘আমাদের এমন আইন প্রয়োজন, যা সংলাপের ‘স্পিরিট' ও বিভিন্ন অবস্থানের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে প্রণয়ন করা হয়৷ নিপীড়ন ও মাত্রাতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে, মুক্তির অধিকার খর্ব করে এককালে আমাদের অঞ্চল ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল৷ এই মর্মান্তিক স্মৃতি জাগিয়ে রাখতে হবে৷''

Bolivien Santa Cruz Papst Franziskus Messe
সান্তাক্রুজে পোপ ফ্রান্সিসছবি: picture-alliance/dpa/M. Alipaz

পোপ এমনভাবেই বার বার সবাইকে বিস্মিত করেন৷ আসলে তিনি ধর্মের মহিমা ও পরিবারের উপর হুমকি নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু তারপর তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘মূল্যবান স্বাধীনতা' নিয়ে ভাষণ দিলেন৷ ইকোয়েডরের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সেটা সরকারের জন্য স্পষ্ট ভর্ৎসনা বৈকি৷

ইকোয়েডরের বিরোধী পক্ষের জন্য এই সব কথা ছিল মলমের মতো আরামদায়ক৷ কয়েক সপ্তাহ ধরে হাজার হাজার মানুষ কিটো-র রাজপথে নেমে প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন৷ ২০১৩ সালে সংবাদ মাধ্যমের অধিকার খর্ব করে যে আইন পাশ করা হয়েছিল, তাঁরা তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন৷

Deutsche Welle Astrid Prange De Oliveira
আস্ট্রিড প্রাঙে, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

ভয় ও আত্মসংযম

বলিভিয়ায়ও সংবাদ মাধ্যমের গলা টিপে ধরার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে৷ পোপের সফরের আগেই স্থানীয় মিডিয়া সংগঠন আর্চবিশপের কাছে একটি চিঠি পেশ করেছিল৷ তাতে তাঁরা পোপ ফ্রান্সিস-এর উদ্দেশ্যে তাঁর সফরের সময় সংবাদ মাধ্যমের উপর বেড়ে চলা নিয়ন্ত্রণ, তথা ভীতি ও আত্মসংযমের পরিবেশের বিরুদ্ধে মুখ খোলার আবেদন জানিয়েছেন৷

পোপ ফ্রান্সিস নিজেও ক্যাথলিক জগতে ভীতি ও আত্মসংযমের পরিবেশের কথা বিলক্ষণ জানেন৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকায় ক্যাথলিক সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি স্পষ্ট ভাষায় ভ্যাটিকানকে অতীতের আদর্শে ফিরে যাবার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ পোপ এল সালভাদোরের প্রাক্তন আর্চবিশপ অস্কার রোমেরো-র অনুরাগী হিসেবে পরিচিত, যিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়েছিলেন৷

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট কোরেরা-ও রোমেরো-র ভক্ত৷ ৩৫ বছর আগে হত্যার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে রোমেরো-কে ‘বিয়াটিফাই' করা হয়৷ ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক হিসেবে কোরেয়া-র কাছে ‘তাঁর নিজের' পোপের কাছ থেকে সংলাপ ও সহিষ্ণুতার বিষয়ে এমন পাঠ অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য