1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দৃকের কর্মকর্তা ইরফানুল হত্যা

সমীর কুমার দে, ঢাকা১১ এপ্রিল ২০১৬

দৃক গ্যালারির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইরফানুল ইসলাম হত্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেছে৷ হত্যাকাণ্ডটির কূল-কিনারা করতে না পারলেও, একে ছিনতাইজনিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধরে নিচ্ছে পুলিশ৷ অবশ্য এর সপক্ষে কোনো তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পায়নি তারা৷

https://p.dw.com/p/1ITHx
প্রতীকী ছবি
ছবি: bilderbox

দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হালকাভাবে বা অপরিকল্পিতভাবে ইরফানুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমি মনে করি না৷ ১৯৯৬ সালে আমার ওপর হামলা হয়েছে৷ আলোকচিত্রী আফতাব আহমেদকে খুন করা হয়েছে৷ এগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা সম্পৃক্ত কিনা বলা মুশকিল৷ তবে পুলিশ যেভাবে বিরোধী দলকে দমনপীড়নে ব্যস্ত, টাকা কামাতে ব্যস্ত, সেখানে তারা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেবে কীভাবে?''

গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ৮ নম্বর রোডে ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হওয়ার পরই নিখোঁজ হন ইরফানুল৷ এর কয়েক ঘণ্টা পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কের কাছে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়, যা হাসপাতালে পাঠায় স্থানীয় পুলিশ৷ ইরফানুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল৷ মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হচ্ছিল৷

ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ আমরা পেয়েছি৷ ব্যাংকের সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে যে, ইরফানুল ইসলাম সকাল ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন৷ তবে ঘাতকরা ব্যাংকের সামনে থেকে ইরফানুল ইসলামকে তুলে নেয়নি বলেই আমরা ধারণা৷ কারণ এ ধরনের একটি ব্যস্ত এলাকা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের অপর এক ব্যক্তিকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নেয়া সম্ভব নয়৷ ইরফানুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে৷ এ মুহূর্তে সেটা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে৷ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বিষয়টি ছিনতাইয়ের ঘটনা বলেই আমাদের মনে হচ্ছে৷''

শহিদুল আলম

দৃক গ্যালারির উপ-মহাব্যবস্থাপক রেজাউর রহমান জানান, ধানমন্ডির অফিস থেকে সকাল ১১টার পর একটি প্রাইভেট কার নিয়ে বেরিয়েছিলেন ইরফানুল৷ অফিসের জন্যই তিনি ঐ তিন লাখ টাকা তোলেন৷ গাড়িচালক ইরফানুলকে ব্যাংকের সামনে নামিয়ে দিয়ে পাশের সাত নম্বর সড়কে চলে যায়৷ এর আগে ঐ সড়কে একবার ট্রাফিক পুলিশ তাঁকে জরিমানা করেছিল বলে গাড়িচালক পাশের সড়কে গিয়ে অপেক্ষা করছিল৷ যাওয়ার সময় চালক এ কথা ইরফানুলকে মোবাইল ফোনে জানিয়েও ছিলেন৷ বেলা ১২টার পর বেশ কয়েকবার কল করেও ইরফানুলের ফোন বন্ধ পান চালক৷ এরপর তাঁর কাছ থেকে দৃকের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে থানায় জিডি করেন৷ রেজাউর বলেন, সম্ভবত সাত নম্বর সড়কে থাকা গাড়িতে উঠতেই তিনি হেঁটে সে দিকে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু পথের মধ্যেই তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷

ইরফানুল ইসলামের ভাই ইমদাদুল ইসলাম বাদি হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ইরফানুলের সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল না৷ তাঁর ওপর কোনো ধরনের হুমকিও ছিল না৷ এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদেরও তিনি কিছু বলেননি৷ ফলে আমরা বুঝতে পারছি না যে, কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হলো৷''

ডয়চে ভেলের এক প্রশ্নের জবাবে শহিদুল আলম বলেন, ‘‘কেন তাঁকে হত্যা করা হয়েছে আমরা বুঝতে পারছি না৷ তবে দেশের একজন নাগরিক এভাবে খুন হবেন, গুম হবেন, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷ দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য এত নিরাপত্তা, সেখানে সাধারণের জন্য কোনো নিরাপত্তা থাকবে না, সেটা হতে পারে না৷ কয়েকদিন পর হয়ত আমরা দেখব যে, একটা জজ মিয়া নাটক তৈরি করা হয়েছে৷ আসলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যারা আছেন তারা যদি সুষ্ঠু তদন্ত না চান, তাহলে সেটা কখনোই হবে না৷ আমাদের দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই৷''

এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে কী থাকতে পারে বলে আপনার মনে হয়? জানান মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য