1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এই প্রথম আফগানিস্তানে ‘যুদ্ধ’র কথা বলল জার্মানি

৪ এপ্রিল ২০১০

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্ল টেওডোর সু গুটেনব্যার্গ এই প্রথম স্বীকার করলেন, যে আফগানিস্তানে জার্মান বাহিনীর অভিযানকে কথ্য ভাষায় ‘যুদ্ধ' বলা যেতে পারে৷ এতদিন শুধু ‘যুদ্ধের মতো' পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছিল৷

https://p.dw.com/p/Mn4r
প্রবল চাপের মুখে গুটেনব্যার্গছবি: AP

আফগানিস্তানে জার্মান সেনাবাহিনীর সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না৷ গত বছর জার্মানির উদ্যোগে ন্যাটোর এক বিমান হামলায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু, জার্মান সৈন্যদের উপর বেড়ে চলা হামলা এবং অতি সম্প্রতি ভুল করে আফগান সৈন্যদের হত্যা – এমন সব ঘটনার ফলে আফগানিস্তানে জার্মান সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ এমনকি ন্যাটো এবং আইসাফ নেতৃত্বও জার্মান সৈন্যদের আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করছে৷ আফগানিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশের মধ্যেও জার্মানদের ভূমিকার সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও আর এই সব ঘটনার দায় এড়াতে পারছেন না৷ অর্থাৎ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে গিয়ে জার্মান সেনাবাহিনীর যে অভিযান শুরু হয়েছিল, তা আজ বিতর্কের বেড়াজালে আটকে পড়েছে৷ দেশেও প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্ল টেওডোর সু গুটেনব্যার্গ৷ রবিবার তিনি বন'এ বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আমরা সব কিছুই করছি৷ কিন্তু যুদ্ধের মত পরিস্থিতিতে, বা কথ্য ভাষায় যাকে যুদ্ধই বলা যেতে পারে, সেই অবস্থায় এমন অপ্রিয় ঘটনার আশঙ্কা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷'' গুটেনব্যার্গ নিহত সৈন্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান৷

Bundeswehrsoldaten vor Chahar Dara Brücke
শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনাস্থল চার দারা’র সেই সেতুছবি: AP

শুক্রবার কুন্দুস'এর কাছে চার দারা জেলায় তালেবান বিদ্রোহীদের হামলার মুখে পড়ে জার্মান সেনাদের এক টহলদারি ইউনিট৷ সংঘর্ষে ৩ জার্মান সৈন্য নিহত ও ৮ জন আহত হয়৷ তারপর জার্মান সেনাবাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন আফগান সৈন্যও নিহত হয়৷ আইসাফ বাহিনীর কমান্ডার – জেনারেল স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টাল শনিবার কুন্দুস'এ জার্মান সেনাদের ঘাঁটিতে গিয়ে শুক্রবারের ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন৷ ন্যাটো, আফগানিস্তান ও জার্মান বাহিনী আলাদা আলাদা করে ঘটনার তদন্ত করছে৷ এই ঘটনার ফলে দেশে-বিদেশে জার্মান সেনাবাহিনীর একাংশের মনোবল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ সবচেয়ে উচ্চপদস্থ প্রাক্তন জার্মান সেনা কর্মকর্তা হারাল্ড কুইয়াট চরম হতাশা প্রকাশ করে সংবাদপত্রে লিখেছেন, যে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জার্মান সেনার নির্দেশে এক বিমান হামলায় যে প্রায় ১৪২ জন হতাহত হয়েছিল, সেই ঘটনা থেকে আজও শিক্ষা গ্রহণ করা হয় নি৷ তাঁর মতে, সঠিক সরঞ্জামের অভাবে জার্মান সৈন্যরা আফগানিস্তানে অসহায় বোধ করছে৷ এমনকি জার্মান সৈন্যদের উপর আরও হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি৷

জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী ডির্ক নিবেল আফগানিস্তান সফর শেষে ফিরছেন৷ তাঁর বিমানেই তালেবান বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত তিন জার্মান সৈন্যের মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে আসা হচ্ছে৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুটেনব্যার্গ নিজে কোলন বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন৷ শনিবারই ৪ আহত সৈন্যকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনা হয়েছিল৷


প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: জাহিদুল হক