উৎসবের দিনগুলোতে পেটকে সুস্থ রাখার কিছু টিপস
বাঙালিদের যেমন বারো মাসে তের পার্বণ৷তেমন সারা বছর সব দেশেই কিন্তু কোনো না কোনো উৎসব লেগে আছে৷ উৎসব মানেই খাওয়া-দাওয়া৷ সব কিছু খেয়েও কিভাবে নিজের পেটকে ঠিক রেখে সেসব উৎসবে আনন্দ করা সম্ভব, তারই কিছু ‘টিপস’ পাবেন এখানে৷
দাওয়াত
যে কোনো বড় দাওয়াতে বা নিমন্ত্রণ বাড়ি যাওয়ার ক’দিন আগে থেকেই খাওয়ার পরিমাণ একটু কমিয়ে দিন৷ সম্ভব হলে আগের ক’টা দিন একটু হালকা খাবার, অর্থাৎ মাংস, চর্বি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খান৷ আর হ্যাঁ, খালি পেটে কখনো দাওয়াতে যাবেন না! যাবার আগে অল্প সালাদ বা সামান্য টক দই খেয়ে নেবেন৷ এতে পেট শান্ত থাকবে এবং পার্টিতে অতিরিক্ত খাওয়াও হবে না৷
খাবার পরিমাণ
অনুষ্ঠানগুলোতে একটু অন্য ধরণের খাবার থাকে, যা প্রতিদিনের খাবারের থেকে আলাদা৷ তাই সেসব লোভনীয় খাবার চেখে না দেখে মনকে কষ্ট দেওয়ার কোনো কারণ নেই৷ সুন্দর সাজানো টেবিলের লোভনীয় খাবার থেকে সবই খাওয়া যেতে পারে, তবে তার পরিমাণ যেন বেশি না হয়৷ টেবিলের যা যা আপনার পছন্দ, সেসব ছোট চামচ দিয়ে অল্প করে নিজের প্লেটে তুলে নিন, আনন্দ করে খান৷
‘বুফে’ খাবার
বাড়ি বা অফিসিয়াল কোনো অনুষ্ঠানে যখন বুফেতে খাবার সাজানো থাকে, মানে ‘টেবিলে প্রচুর খাবার রয়েছে, যত ইচ্ছে খান’, তখন লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ভাজা-ভুজি, চর্বিজাতীয় মাংস এবং মাংসের ঝোল কম খাওয়া হয়৷ বুফেতে খাওয়াটা আসলে পেট এবং ওজনের জন্য বেশ বিপজ্জনক৷ তাই বুফেতেও বেশি করে সবজি এবং সালাদ খান৷ শেষপাতে খান দই বা ফল৷ আর সম্ভব হলে দাঁড়িয়ে না খেয়ে খান বসে৷
ধীরে খেলে খাওয়া সহজে হজম হয়
খাবার একটু ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান – এতে খাবার ভালো হজম তো হবেই, তার সঙ্গে পরিমাণেও কম খাওয়া হবে৷ সোজা কথা খাবার উপভোগ করুন৷ তাড়াহুড়ো করে বেশি খেতে গেলে তা পেটের জন্য ‘স্ট্রেস’ হয় এবং মস্তিষ্কেও চাপ পড়ে৷ খাবারের সময় মোবাইল বন্ধ রাখবেন৷ এছাড়া টেলিভিশন দেখতে দেখতে খাওয়াও ভালো নয়৷ কারণ, অন্যমনস্ক হলে খাওয়া বেশি হয়৷
প্রচুর পানি পান করুন
খাবার খাওয়ার বেশ কিছুটা সময় পরে পানি পান করলে তা খাবারকে হজম করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে৷ হালকা চা এবং পানি পান করাও উত্তম৷ মিষ্টি, অর্থাৎ কোকাকোলা, ফান্টা বা মিষ্টি জাতীয় পানি কম খান এবং পরিমিত অ্যালকোহল পান করুন৷ অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা মিষ্টি পানীয় পেটে অম্বল বা গ্যাস হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ৷
আগে থেকেই সতর্কতা
উৎসবের দিনগুলোতে তুলনামূলকভাবে সবাই একটু বেশিই খায়৷ ফলে অনেকেরই অম্বল বা অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা থাকে৷ তাই আগে থেকেই ম্যাগনেশিয়াম ট্যাবলেট বা এ ধরণের কিছু বাড়িতে রাখবেন, তাতে পরে উপকারে আসবে৷ তবে অবশ্যই এর আগে ডাক্তার বা যাঁদের এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁদের পরামর্শ নেবেন৷ নিজে থেকে ডাক্তারি করা স্বাস্থ্যের ক্ষতিও যে করতে পারে!
পরিমিতি বোধ
জার্মানির খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ সব কিছু খেতে পারে৷ কারণ শরীরকে সুস্থ রাখতে সব রকমের খাবার, যেমন ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, শর্করা এবং আঁশযুক্ত খাবার – সব কিছুরই প্রয়োজন রয়েছে৷ এখন শুধু প্রশ্ন – কতটা? অর্থাৎ খাওয়ার সময় পরিমিতি বোধটা থাকতে হবে সকলেরই৷
প্রয়োজনে একটু হেঁটে আসুন
বেশি খাওয়ার পর যা ভীষণ উপকারে আসে, সেটা হচ্ছে খানিকক্ষণ বাইরে হেঁটে আসা৷ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেছেন? ভাবনা নেই, আপনার সঙ্গী বা পরিবারের কাউকে নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট বাইরে হেঁটে আসুন৷ দেখবেন শরীরটাকে বেশ হালকা লাগছে!