1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউ এন ওম্যানের প্রধান মিশেল বাচেলেট

২ অক্টোবর ২০১০

জাতিসংঘের মহিলা বিষয়ক দপ্তর ইউ এন ওম্যানের প্রধান চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচেলেট৷ সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এই দুটি পদে আসীন হলেন চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট৷

https://p.dw.com/p/PShn
মিশেল বাচেলেটছবি: AP

সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন তাঁকে জাতিসংঘের উপ মহাসচিব পদে নিযুক্ত করেছেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব যখন ঘোষণা দিলেন, যে তিনি মিশেল বাচেলেটকে ইউ এন ওম্যানের দায়িত্ব দিতে চান, তখন কিন্তু কেউই অবাক হয়নি৷ বরং সবাই স্বাগত জানিয়েছে সে সিদ্ধান্তকে৷ এর মূল কারণ হল চিলির এই সাবেক প্রেসিডেন্ট সবসময়ই মেয়েদের বিভিন্ন অধিকার আদায়ে কাজ করে গেছেন৷

মহাসচিব বান কি-মুন বেশ স্পষ্টভাবেই বলেছেন, মেয়েদের সমানাধিকারের বিষয়ে ভবিষ্যতে আরো বেশি কাজ করতে হবে৷ বিশ্ব শ্রম সংস্থাও ইতিমধ্যেই বিষয়টির দিকে নজর দিচ্ছে৷ বাস্তব সত্য হল, ঠিক সময়েই এমন একজন মহিলা ইউ এন ওম্যানের দায়িত্ব নিলেন, যখন মেয়েদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া খুবই জরুরি৷ জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের তথ্য বিষয়ক দপ্তরের পরিচালক কোরিন মমাল ভানিয়ঁ জানালেন, কেন এই পদটির জন্য মিশেল বাচেলেটই উপযুক্ত ব্যক্তি৷ ভানিয়ঁ জানান, ‘‘মিশেল বাচেলেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করছেন অনেক দিন ধরে৷ গুরুত্বপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিটি সম্মেলনে তিনি উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি এক সময় একটি দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ দেশটি শাসন করেছেন৷ তাঁর জন্য ৮০০ কর্মী নিয়ে একটি সংস্থা চালানো কোন ব্যাপারই না৷ তিনি যে কোন সময়েই যে কোন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যে কেউই তাঁর সঙ্গে সময় নিয়ে কথা বলবেন৷ এর মূল কারণ হল মিশেল বাচেলেটকে সবাই চেনে৷ আন্তর্জাতিক যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলার, আলোচনা করার এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তিনি রাখেন৷''

Gaza Palästinenser Mädchen als Zuschauer bei Sport
বাচেলেটের প্রথম কাজ হবে নারী-পুরুষের মধ্যে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করাছবি: AP

সবকিছু কী এতই সহজ হবে?

ইউ এন ওম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর মিশেল বাচেলেট'এর প্রথম কাজ হবে নারী-পুরুষের মধ্যে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা এবং বৈষম্যের হাত থেকে মেয়েদের মুক্ত করার চেষ্টা চালানো৷ যদিও গত কয়েক বছরে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, তারপরেও বলা যায় মিশেল বাচেলেট'এর সামনে অপেক্ষা করছে বিশাল এক চ্যালেঞ্জ৷ মহিলা বিষয়ক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ওম্যান রাইটস এ্যাকশান ওয়াচ'এর মেরি শান্তি দায়রিয়াম সতর্ক করে দিয়ে জানান, ‘‘ ইদানিং যে বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে, তা হল বৈষম্যের পক্ষে বা সমানাধিকারের বিপক্ষে কথা বলা একেবারেই সঠিক হিসেবে গণ্য করা হয় না৷ এ নিয়ে তর্ক জুড়ে দিলেও ধরে নেওয়া হয়, সে ব্যক্তিটি বৈষম্যের পক্ষে বা সমানাধিকারের বিপক্ষে৷ আমরা এমন একটি জায়গায় এসে পৌঁছেছি, যেখানে আমরা সবাই বিশ্বাস করি সমানাধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ আমরা সবাই খোলাখুলিভাবেই বলি, বৈষম্যের হাত থেকে প্রতিটি মেয়েকে রক্ষা করা জরুরি৷ কিন্তু আমাদের আশেপাশেই অনেকেই রয়েছেন, যারা ভিতর থেকে এই যুক্তিগুলো মানেন না৷ এরাই কোন না কোনভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছেন৷ ঠিক এ কারণেই বৈষম্য দূরীকরণ এখনও দূর অস্ত৷ তাদের সবসময়ই বলতে শোনা যায় – না না, সমানাধিকার আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈকি! কিন্তু তারপরেও সমস্যাতো কিছুটা আছেই৷''

বাধা এসেছে জাতিসংঘের পক্ষ থেকেই

মেয়েদের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা বা তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য দূর করার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কখনো যথেষ্ট অর্থ পাওয়া যায় না৷ বিভিন্ন ধরণের অজুহাত শোনা যায়৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘এটা উপযুক্ত সময় নয়' – এ ধরণের যুক্তি দেখানো হয়৷ তাই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সবসময়ই এক ধরণের ‘স্ট্যাটাস কো' বা অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে৷ এগিয়ে যায় না, আবার পিছিয়েও আসে না৷ ইউ এন ওম্যান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এ ধরণের সমস্যা হয়েছিল বলে জানান মেরি দায়রিয়াম৷ আক্ষেপের সঙ্গে তিনি জানান, ‘‘ ইউ এন ওম্যান প্রতিষ্ঠা করতেও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে৷ জাতিসংঘের ভেতর থেকেই এসেছে অনেক বাধা৷ হঠাৎ করে শুধুমাত্র মহিলাদের হাতে এত ক্ষমতা চলে যাবে, তা মেনে নিতে অনেকেরই কষ্ট হয়েছে৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন