ইউরোপের দশটি সেরা অ্যামিউজমেন্ট পার্ক
অ্যামিউজেন্ট পার্ক, থিম পার্ক, ফানফেয়ার, যাই বলুন না কেন, আজ তা আধুনিক সভ্যতার অঙ্গ৷ ইউরোপের মানুষ - যেমন বড়রা, তেমনই ছোটরা - অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ভক্ত৷ কিন্তু তাদের মধ্যে সেরা কোনগুলো?
ভিয়েনার ‘প্রাটের’
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার মাঝখানে এক টুকরো সবুজ জমিতে পাবেন বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, যাকে বলা হয় ‘ভুর্স্টেলপ্রাটের’৷ তৈরি হয়েছিল আড়াইশো বছর আগে৷ বছরে চল্লিশ লাখ দর্শক আসেন এর বিভিন্ন মঞ্চ আর ‘রাইড’ দেখতে আর উপভোগ করতে৷ প্রাটের-এর ৬৫ মিটার উঁচু ফেরিস হুইল ভিয়েনার সবচেয়ে নামকরা পরিচয়চিহ্নগুলির মধ্যে পড়ে৷
জার্মানির রুস্ট-এ ইউরোপা পার্ক
দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির ফ্রাইবুর্গের প্রান্তে দেখতে পাবেন জার্মানির বৃহত্তম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, যার নাম ইউরোপা পার্ক৷ ২০১৫ সালে চল্লিশ বছর পূর্ণ করে এই পার্ক৷ ইউরোপীয় ‘থিম’ অনুযায়ী সৃষ্ট পার্কের ১৩টি এলাকায় দর্শকদের জন্য রাখা আছে মোট ১০০টি আকর্ষণ৷ রোলার কোস্টারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল ব্লু ফায়ার, শূন্য থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে যার আড়াই সেকেন্ডের বেশি সময় লাগে না৷
প্যারিসের ডিজনিল্যান্ড
ডিজনিল্যান্ড যেমন হয়ে থাকে: রোলার কোস্টার ইত্যাদি তো আছেই, তবে পার্কের আসল আকর্ষণ হল মিকি আর মিনি মাউসের মতো ডিজনির কার্টুন ছবির নানা চরিত্র৷ প্রতিবছর দেড় কোটি দর্শক৷ পার্কও সুবিশাল, প্রায় দু’হাজার হেক্টর, প্যারিসের পাঁচ ভাগের এক ভাগ৷
ইটালির গার্দাল্যান্ড
জায়গাটার নাম কাস্তেলনুয়োভো দেল গার্দা, সুবিখ্যাত গার্দা হ্রদের পাশে৷ একটি জাদুবৃক্ষের চারপাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে এক কল্পনার জগৎ৷ পার্কের রক্ষক, প্রেৎসেমোলো নামের একটি ড্র্যাগন, এখানেই থাকে৷ নয়তো আছে চল্লিশটির বেশি আকর্ষণ৷ বছরে সাতাশ লক্ষের বেশি দর্শক৷ পার্কের চারটি এলাকা: অ্যাড্রেনালিন, অ্যাডভেঞ্চার, ফ্যান্টাসি এবং শো৷
স্পেনের পোর্ত-আভেন্তুরা
বার্সেলোনার দক্ষিণে সালু নামের একটি জায়গায় এই অ্যাডভেঞ্চার পার্ক৷ এখানে থিম-সংক্রান্ত বিভিন্ন এলাকা আছে, যেমন ভূমধ্যসাগর কিংবা পলিনেশিয়া৷ বছরে ৩৫ লাখ দর্শক৷ ২০০৭ সালে এখানে ইউরোপের সবচেয়ে দ্রুতগতি রোলার কোস্টার চালু হয়: ফুরিউস বাকো নামের রোলার কোস্টারটি ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে৷
পর্তুগালের জু-মেরিন
গুইয়া-র এই জু-মেরিন, মানে ‘সামুদ্রিক চিড়িয়াখানায়’ যা কিছু সার্কাস দেখানোর, তা দেখায় শুশুক আর সিল মাছেরা৷ পার্কের পোষা তোতাপাখিরাও তা’তে যোগ দেয়৷ মানুষ-মানুষীরাও একটি ওয়েভ পুল আর বিভিন্ন ওয়াটার স্লাইড পরীক্ষা করে দেখতে পারেন৷
ব্রিটেনের অ্যাল্টন টাওয়ার্স
ইংল্যান্ডের উত্তরে, বার্মিংহ্যাম শহরের কিছু উত্তরে ফার্লে৷ সেখানেই একটি সুবিস্তৃত উদ্যানের মাঝখানে অ্যাল্টন টাওয়ার্স নামধারী এক গথিক ক্যাসল৷ তার ভিতরে একটি ডাইনিদের রাইড আছে৷ অন্যান্য এলাকার মধ্যে পড়বে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন, যেখান থেকে পুরো পার্কটির একটি সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়৷
নেদারল্যান্ডসের এফটেলিং
কাটসহোয়ভেল-এর এই অ্যামিউজমেন্ট পার্কটির উপজীব্য হল রূপকথা আর রূপকথার নানা আজগুবি জীব ও চরিত্র৷ এখানে একটি থ্রিডি সিনেমা, একটি ওয়াটার কোস্টার আর রূপকথার বনানী আছে৷ সর্বাধুনিক আকর্ষণ হল ব্যারন ১৮৯৮ নামের একটি রোলার কোস্টার৷ রোলার কোস্টারের যাত্রীরা ব্যারন-এর বন্ধু হয়ে যান৷ ব্যারন নাকি একটা পুরনো কয়লাখনিতে সোনা খুঁজে পেয়েছিলেন৷ কাজেই ব্যারনের সঙ্গে নামতে হবে সেই অতলে...৷
ডেনমার্কের লেগোল্যান্ড
জায়গাটার নাম বিলুন্ড৷ এখানে প্রায় ছ’কোটি লেগো ব্রিক দিয়ে খুদে খুদে বাড়িঘর, জাহাজ, গাড়ি ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়েছে - সেটাই হল মূল আকর্ষণ, যদিও রাইডও আছে৷ ১৯৬৮ সালে লেগো কারখানার স্বল্প দূরে এই পার্কটির উদ্বোধন করা হয়৷ আজ সারা বিশ্বে দশটি লেগোল্যান্ড আছে৷
সুইডেনের লিজব্যার্গ
গথেনবার্গ শহরের ঠিক মাঝখানে সুইডেনের বৃহত্তম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক৷ বছরে প্রায় ত্রিশ লাখ দর্শক৷ লিজব্যার্গের প্রধান আকর্ষণগুলির মধ্যে পড়ে অ্যাটমস-ফিয়ার নামের একটি ফ্রি-ফল টাওয়ার৷ আরোহীরা এখানে সোজা ৯০ মিটার উচ্চতা থেকে নেমে আসেন৷ ফেরিস হুইলটি থেকে সুইডেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের একটি সুন্দর প্যানোরামা দেখতে পাওয়া যায়৷