1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের অভিন্ন আকাশসীমা

৭ মে ২০১০

ইউরোপে বিমান চলাচল ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার মোকাবিলা করতে ইউরোকন্ট্রোল সংস্থা হাতে নিতে যাচ্ছে সিঙ্গেল ইউরোপিয়ান স্কাই অর্থাৎ অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশসীমা প্রকল্প৷

https://p.dw.com/p/NFTt
অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশসীমা প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছেছবি: AP

ইউরোপের আকাশ সীমার দায়িত্বে রয়েছে ইউরোকন্ট্রোল৷ সিঙ্গেল ইউরোপীয়ান স্কাই বা অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশসীমা প্রকল্পের মাধ্যমে ইউরোপের আকাশে বিমান চলাচল অনেক সহজ করার কথা ভাবছে সংস্থাটি৷ এর মধ্যে ইউরোপের ৩৮টি দেশের আকাশসীমাকেঅন্তর্ভুক্ত করা হবে৷ মূল লক্ষ্য হল বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেমকে একটি অভিন্ন নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা৷ সবার জন্য থাকবে একটি আইন, সবাই কাজ করবে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট নিয়মবিধি অনুযায়ী৷ বর্তমানে যে নিয়ম প্রচলিত তা বেশ জটিল৷ জানালেন জার্মান এয়ার নেভিগেশন সার্ভিসের কর্মকর্তা ক্রিস্টিনা কেলেক৷ তাঁর মতে নতুন নিয়মবিধি হবে সবার জন্য অনেক সহজ৷

কেলেক বলেন, শুধু যাত্রী নয় বরং এই নতুন নিয়মটির মধ্যে দিয়ে এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোর অর্থেরও সাশ্রয় হবে৷ বাঁচবে সময় এবং ঠিক নির্দিষ্ট সময়েই গন্তব্যস্থলে যাত্রীরা পৌঁছে যাবে৷ এরসঙ্গে নিরাপত্তাও বাড়বে আগের চেয়ে বেশি৷ এর অর্থ হল নতুন নিয়ম অনুযায়ী সব দেশগুলোকে ফ্লাইট নেভিগেটিং সিস্টেমকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রযুক্তির আরো উন্নতি ঘটাতে হবে৷ এ জন্য সব দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন৷

এ পর্যন্ত যে সব দেশকে এই অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশ সীমা প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে তারা সবাই এই একক একটি নিয়মের ব্যাপারে আগ্রহী৷ এই নিয়ম অনুযায়ী সব দেশই লাভবান হবে, বিমানযাত্রার মান উন্নত হবে সে বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই৷ একটি মাত্র ব্যবস্থা মেনে কাজ করবে ৩৮টি দেশ৷

Lufthansa steigt bei Brussels Airlines ein
প্রকল্পটি চালু হলে এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোর অর্থের সাশ্রয় হবেছবি: picture-alliance/dpa (M)

ইউরোকন্ট্রোল জানিয়েছে, ২০১২ সালের মধ্যে ইউরোপের আকাশকে মাত্র ৯টি আঞ্চলিক জোনে ভাগ করা হবে৷ কিন্তু কাজটা কি আসলেই এত সহজ ? ইউরোকন্ট্রোলের প্রধান বো রেডেবর্ণ মনে করছেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা খুব সহজ হবে না৷ রেডেবর্ণের নিজেই বললেন, একটি মাত্র নিয়মের মধ্যে কাজ করতে সবাই আগ্রহী৷ সহযোগিতা থাকবে, থাকবে সামঞ্জস্য৷ কিন্তু তা ততক্ষণই কাজ করবে যতক্ষণ কেউ নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাবেনা৷ কেউ যদি মনে করে আমি এতদিন যা করেছি এখনও তাই করবো এবং সবাইকে তা-ই করতে হবে - সমস্যার সৃষ্টি হবে তখনই৷

এক্ষেত্রে সম্প্রতি আইসল্যান্ড্যের এইয়াফিয়াদলা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে পড়া ছাইমেঘের কথা বলতেই হচ্ছে৷ টানা ছয়দিন ইউরোপের আকাশে কোন বিমানকেই ওড়ার অনুমতি দেয়া হয়নি৷ যাত্রীরা পৌঁছাতে পারেননি নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে৷ এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো তীব্র অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল৷ এধরণের ঘটনা এড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এয়ারলাইন্সগুলো এই অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশসীমা প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন চাইছে৷৷ কিন্তু বো রেডেবর্ণ মনে করছেন, প্রকৃতিক দুর্যোগের সময় হয়তো এই নিয়ম বিমান চলাচল সংস্থাগুলোকে পুরোপুরি রক্ষা করতে সক্ষম হবে না৷

রেডেবর্ণ জানান, এই সিঙ্গেল স্কাইয়ের নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু হবে অত্যন্ত সহজ৷ তথ্যের আদান-প্রদান হবে অত্যন্ত দ্রুত৷ কিন্তু নিখুঁতভাবে নিয়মগুলোর উল্লেখ করা হয়নি৷ অথবা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় কোন্ নিয়ম মেনে চলতে হবে তাও বলা হয়নি৷ তখন অবস্থা এখনকার মতই হবে৷ কারণ অগ্ন্যুৎপাতকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই৷ এ ধরণের সমস্যা আগে কখনো হয়নি৷ যে কারণে কি করতে হবে বা কি করা উচিৎ তা কারো জানা নেই৷ ঠিক কতদূর দিয়ে উড়ে গেলে প্লেনের কোন ক্ষতি হবে না, প্লেন নিরাপদ থাকবে কিনা তা বের করতে আমাদের ৬ দিন সময় লেগেছিল৷

অভিন্ন ইউরোপীয় আকাশসীমা প্রকল্প অনুযায়ী খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো যাবে দ্রুত৷ সরাসরি আকাশ সীমানা পেরিয়ে যাবে যে কোন প্লেন৷ এতে সময় বাঁচবে, অর্থ বাঁচবে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হবে অনেক কম৷

প্রতিবেদন : মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা : আবদুল্লাহ আল-ফারূক