1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরনের কাজ শুরু করল ইরান

৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০

প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইরান ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করল৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স ইরানের উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ডাক দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/LxLL
নাতান্স পরমাণু কেন্দ্রছবি: AP

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির শীর্ষ কর্মকর্তা আলী আকবর সালেহি মঙ্গলবার সরকারী সংবাদ সংস্থা ইরনা'কে জানিয়েছেন, যে নাতান্স পরমাণু কেন্দ্রে ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু হয়েছে৷ এই প্রকল্পে ১৬৪টি সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করা হবে৷ মাসে ৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হবে বলে সেদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ এই ইউরেনিয়াম পরে ইস্ফাহানে চিকিৎসার কাজে তৈরি পরীক্ষামূলক এক চুল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে৷ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ অবশ্য জানিয়েছে, যে একদল পরিদর্শক ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন৷ তাঁরা এবিষয়ে এক রিপোর্ট জমা দেবেন৷

Aliakbar Salehi Chef der Organisation für Atomenergie Iran
ইরানের পরমাণু কর্মসূচির শীর্ষ কর্মকর্তা আলী আকবর সালেহিছবি: ISNA

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে সক্ষম হলে ইরান ভবিষ্যতে ৯৩ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামও তৈরি করতে পারবে, যা পরমাণু অস্ত্র জন্য জরুরি – কারণ দুটি ক্ষেত্রেই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়৷ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার বলেছেন, যে বিদেশের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরনের প্রস্তাবের সঙ্গে সাম্প্রতিক এই উদ্যোগের কোন বিরোধ নেই৷ ইরানের চাহিদা পূরণ করাই এক্ষেত্রে মূল বিষয় – বিদেশ থেকে সেই ইউরেনিয়াম পাওয়ার পথও খোলা রয়েছে৷

বলাই বাহুল্য, ইরানের এই পদক্ষেপের ফলে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট কড়া প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে৷ এমনকি রাশিয়াও ইরানের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে খোলাখুলি সন্দেহ প্রকাশ করেছে৷ সেদেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না, ইরানের এমন দাবি সত্ত্বেও সমৃদ্ধকরনের মাত্রা আচমকা বাড়ানোর ফলে বাকি বিশ্বের মনে সংশয় আসতে বাধ্য৷ ফ্রান্স সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানের উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর লক্ষ্য স্থির করছেন বলে তাঁর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন৷ ফ্রান্সও কড়া পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করেছে৷ ইরানের নেতৃত্ব যে রাষ্ট্রকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছে, সেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু তেহেরানের উপর এমন নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ডাক দিয়েছেন, যা সত্যি সেদেশকে পঙ্গু করে দেবে৷ তাঁর মতে, ইরান যেভাবে পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে এগিয়ে চলেছে, তা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সমাজকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে৷ জেরুসালেমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সামনে তিনি একথা বলেন৷

এর মধ্যে মঙ্গলবার তেহেরানে ইটালির দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে৷ ইটালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্কো ফ্রাটিনি বলেন, প্রায় ১০০ মানুষ দূতাবাসের সামনে ইটালির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে এবং পাথর ও ডিম ছুড়তে থাকে৷ তারা অবশ্য দূতাবাসের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে নি৷ ফ্রাটিনির মতে, বিক্ষোভকারীরা আসলে ইরানের কুখ্যাত ‘বাসিজ' নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিল৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক