1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইইউ নির্বাচনের পর কোন্দল

২৯ মে ২০১৪

২৮টি দেশের নেতৃবর্গ মঙ্গলবার ব্রাসেলসে একত্র হয়ে কিছুই নির্ধারণ করতে পারেননি, তবে নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছেন অথবা ব্যক্ত করতে বাধ্য হয়েছেন৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট যে কে হবেন, তা এখনও সম্পূর্ণ অজ্ঞাত৷

https://p.dw.com/p/1C8Rr
মার্টিন শুলৎস (বায়ে) ও জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকার (ডানে) – কে হবেন প্রধান?ছবি: John Thys/AFP/Getty Images

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে মধ্য-ডান ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি (ইপিপি) সর্বাধিক আসন সংগ্রহ করলেও, তাদের মুখ্য প্রার্থী, লুক্সেমবুর্গের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকারের ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট হবার আশা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর, কমপক্ষে দূরাহত হয়ে এসেছে৷

তার কারণও সহজ: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইয়ুংকারের মনোনয়নের বিরোধী৷ তাঁর দৃষ্টিতে ইয়ুংকার হলেন পুরনো আমলের ইউরোপীয় ফেডারালিস্ট৷ ওদিকে ব্রিটেনে ইইউ-বিরোধী ইউকেআইপি দলের ব্যাপক সাফল্যের পর ক্যামেরনকে এখন ইউরোপ প্রসঙ্গে আরো কড়া হতে হচ্ছে৷

কাজেই ক্যামেরন ব্রাসেলস সম্মেলনের সূচনাতেই ‘‘চেঞ্জ’’, অর্থাৎ পরিবর্তনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন: ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই নির্বাচনের ফলাফলকে উড়িয়ে দিয়ে ‘বিজনেস অ্যাজ ইউজুয়াল’ করতে পারে না৷ ইউরোপের চাই পরিবর্তন – এই হলো ক্যামেরনের যুক্তি৷

‘‘আমাদের এমন একটা মনোভাব চাই যা স্বীকার করে নেবে যে, ব্রাসেলস মাত্রাধিক রকম বড়, কর্তৃত্বমূলক ও অকারণ হস্তক্ষেপ প্রবণ,’’ বলেছেন ক্যামেরন৷ ‘‘আসলে হওয়া উচিত: যতদূর সম্ভব জাতিভিত্তিক, একক দেশ, এবং যেখানে প্রয়োজন, শুধুমাত্র সেখানেই ইউরোপ৷’’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদকেও দেখতে হয়েছে, ইইউ এবং অভিবাসন বিরোধী ন্যাশনাল ফ্রন্ট কিভাবে নির্বাচনে সারা দেশ জয় করেছে৷ ওলঁদ এখন চান, ইইউ প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, জ্বালানিশক্তি এবং সীমান্তে সুরক্ষা (অর্থাৎ বস্তুত অভিবাসন রোধ) ইত্যাদি বিষয়ের উপর মনোনিবেশ করুক৷

EU Deutschland Angela Merkel in Brüssel Pressekonferenz
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলছবি: Reuters

বস্তুত ‘‘চেঞ্জ’’-এর ডাক এবার এসেছে ছোট-বড় সব দেশ থেকে৷ লিথুয়ানিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যদি বলে থাকেন, ‘‘সব ইউরোপীয় নেতার দায়িত্ব হলো ইউরোপকে বদলে দেওয়া’’, তাহলে ইটালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ইউরোপেকে যে বাঁচাতে চায়, তার ইউরোপকে বদলাতে হবে৷’’

ইউরোপকে বদলানোর পথে প্রথম পদক্ষেপ হবে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ সংসদীয় রীতি অনুযায়ী ইপিপি-র মুখ্য প্রার্থী জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকারেরই কমিশনের প্রেসিডেন্ট হবার কথা৷ লিসবন চুক্তি অনুযায়ী কিন্তু ইইউ নেতৃবর্গ সেটা মেনে নিতে বাধ্য নন৷

ইয়ুংকারকে কেন্দ্র করে বিরোধটা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের মধ্যে প্রকাশ্য ক্ষমতার লড়াইয়ে পর্যবসিত হতে পারত, কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে সকলেই জানেন যে, ইইউ-কে এবার আপোষের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে হবে৷

EU Gipfel in Brüssel
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনছবি: Reuters

বাস্তবে করাও হয়েছে তাই৷ খোদ ম্যার্কেল ইয়ুংকারের প্রতি নরম-গরম সমর্থন দেখিয়ে বস্তুত ইপিপি প্রার্থীর নিশ্চিত জয়টাকে চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন৷ এটা আবার ইউরোপীয় সংসদের প্রতিও একটা সিগনাল: কেননা সংসদের রক্ষণশীল এবং সমাজতন্ত্রী জোটের সদস্যরা মোটামুটি ঠিকই করে ফেলেছিলেন যে, ইয়ুংকার কমিশনের প্রেসিডেন্ট হবেন এবং সমাজতন্ত্রীদের মুখ্য প্রার্থী মার্টিন শুলৎস হবেন তাঁর ডেপুটি৷

ইউরোপীয় সংসদ যে এভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, ইইউ-এর সর্বোচ্চ পদটি কে অলঙ্কৃত করবেন – আর ইউরোপীয় পরিষদ সেটা মুখ বুজে মেনে নেবে, তা কল্পনা করাই ভ্রম৷ ঘটেছেও ঠিক তাই: ইইউ-এর স্বভাবসিদ্ধ পদ্ধতি অনুযায়ী অনেকে অনেক কিছু বলেছেন, আবার অনেকের কিছু না বলাটাই একটা মহৎ বিবৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

মোট কথা, ম্যার্কেল বলেছেন, যেহেতু কোনো জোটই সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি, সেহেতু কমিশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একটি ‘‘প্রশস্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার’’ প্রয়োজন৷ ইপিপি-র সদস্য হিসেবে তিনি ইয়ুংকারকে সমর্থন করেছিলেন বটে, কিন্তু তাঁকে লিসবন চুক্তিকেও সম্মান করে চলতে হবে, বলেছেন ম্যার্কেল৷

সব মিলিয়ে টানাপোড়েনটা চলবে আপাতত ইউরোপীয় সংসদ ও ইউরোপীয় পরিষদের মধ্যে৷ আপোষ হিসেবে ইইউ-এর প্রেসিডেন্ট হ্যার্মান ফান রম্পয়কে ইউরোপীয় সংসদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বসতে বলা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে এই প্রক্রিয়া কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে৷

সংসদের সঙ্গে বিরোধও চরমে উঠতে পারে৷ অথচ এই মুহূর্তে ‘‘ইউরোপের কোনো নতুন সংকটের মুখোমুখি হবার মতো শক্তি নেই’’, বলেছেন লুক্সেমবুর্গের প্রধানমন্ত্রী সাভিয়ের বেটেল৷

এসি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)

EU Frankreich Francois Holland in Brüssel
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদছবি: Reuters
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য