আয়ারল্যান্ডের সংকটের ভার শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাঁধে
২৩ নভেম্বর ২০১০ইউরোপের একটি দেশের দিকেই আপাতত সবার নজর৷ এই তো, কিছুদিন আগে পর্যন্ত ছোট্ট দেশ আয়ারল্যান্ডের হাই-টেক শিল্প ও অর্থনৈতিক সাফল্যের কত প্রশংসা শোনা যাচ্ছিল৷ আজ গভীর আর্থিক সংকটে ডাবলিন সরকার৷
সরকারের গদি টলমলে
রবিবার আয়ারল্যান্ডের সরকার শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফ'এর ঋণের ছত্রছায়ায় আসতে রাজি হওয়ায় সোমবার দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷ অন্যতম শরিক সবুজ দল বেঁকে বসেছে৷ জোটের দুই নির্দল সাংসদও সমর্থন তুলে নিয়েছেন৷ তারা আর সরকারের উপর আস্থা রাখতে রাজি নয়৷ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে জনগণকে আশ্বাস দিয়েও রাতারাতি সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ব্রায়ান কাউয়িন রোষের মুখে পড়েছেন৷ ফলে সোমবার তিনি কার্যত হল ছেড়ে দিয়ে বললেন, জানুয়ারি মাসে সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে দেবেন৷
এবার রাজনৈতিক সংকট
ঠিক৷ কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী ব্রায়ান কাউয়িন দেশের মান-সম্মান ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে একটি বিষয়ে অনড় রয়েছেন৷ ই.ইউ.'র সহায়তা নিতে রবিবার তাঁর সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা কার্যকর করার আগে হাল ছাড়তে রাজি নন তিনি৷ সরকারি ব্যয় কমাতে বুধবার তিনি ৪ বছরের এক কর্মসূচি সংসদে পেশ করবেন৷ ৭ই ডিসেম্বর তিনি বাজেটের খসড়া পেশ করবেন৷ জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে তিনি এই দুটি সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থনের দাবি করছেন৷ তারপরই তিনি সরে দাঁড়াতে প্রস্তুত৷
সরকার নিরুপায়
এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে৷ ব্যাঙ্কিং সংকট সামলাতে সরকার যে বিশাল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, তার ফলে বাজারে আয়ারল্যান্ডের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ বাজেট ঘাটতিও রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়েছে৷ এই অবস্থায় বাইরের সাহায্য নেওয়া ছাড়া উচিত ছিল না৷ কিন্তু তার বদলে বেশ কিছু অপ্রিয় সিদ্ধান্তও নিতে হচ্ছে সরকারকে, যার মূল ভার সামলাতে হবে সাধারণ মানুষকেই৷ তাদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে ব্যাপক কাট-ছাঁট করা হচ্ছে৷ বসাতে হচ্ছে নতুন কর, বাড়াতে হচ্ছে প্রচলিত করের হার৷ শ্রমিক সংগঠন ও অন্যান্য মহল এর ফলে প্রবল জনরোষের আশঙ্কা করছে৷ নির্বাচনে বিরোধী পক্ষের জয় হলে তাদের পক্ষেও পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হবে৷ প্রধানমন্ত্রী কাউয়িন এই কথাটাই বিরোধীদের বোঝাবার চেষ্টা করে চলেছেন৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়