আর্থিক ত্রাণের সাতবছর, গ্রিসের পরিস্থিতি আরো সঙ্গিন
গত কয়েকবছর ধরে শত শত কোটি টাকা আর্থিক ত্রাণ পাওয়া সত্ত্বেও গ্রিসে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়েছে৷ অধিকাংশ গ্রিক নাগরিক নিজেদের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন এবং অনেকে লঙ্গরখানা ও ত্রাণের জিনসপত্র দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন৷
অর্থনৈতিক দুরবস্থা
গ্রিকদের একটা বড় অংশ এখনো কোনরকমে তাদের খরচ তুলতে পারেন৷ অথচ গত সাতবছরে কয়েক বিলিয়ন ইউরো আর্থিক ত্রাণ হিসেবে পেয়েছে সেদেশ৷ কিন্তু তাসত্ত্বেও দারিদ্র্যতা সেদেশে এক বড় ইস্যু৷ আর পরিস্থিতিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশের তুলনায় ক্রমশ অবনতির দিকে৷
গ্রিসের জন্য তিনটি বেইলআউট
ছবিতে এথেন্সে সামাজিক সুবিধা নিতে আসা গ্রিকদের ভিড় দেখা যাচ্ছে৷ বৈশ্বিক আর্থিক সংকট এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোজোনের চারটি দেশকে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের মুখাপেক্ষী হতে বাধ্য করেছে৷ আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল এবং সাইপ্রাস – এরা সবাই আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করেছে৷ তবে গ্রিস, যেদেশ ২০১০ সালে প্রথম বেইলআউট প্যাকেজ গ্রহণ করেছিল, ইতোমধ্যে তিনবার সহায়তা নিয়েও ভাগ্য বদলাতে পারেনি৷
কঠিন সময়
৬১ বছর বয়সি সাবেক শিক্ষিকা ইভা আগকিসালাকি অর্থোডক্স চার্চের তৈরি এক লঙ্গরখানায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন৷ কেননা বেইলআউট প্যাকেজের আওতায় যখন অবসরের বয়স ৬৭ বছর করা হয়, তখন তাঁর চাকুরির চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ তাঁর স্বামীর পেনশনের একটি অংশ, যা আবার আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের চাপে ৯৮০ ইউরো থেকে কমে ৬০০ ইউরো হয়েছে, তাঁর ছেলে এবং মেয়ের পরিবারে চলে যায়৷
অধিকাংশ গ্রিকই কোনক্রমে টিকে আছে
লঙ্গরখানা থেকে কিছু সহায়তা পান ইভা যা তিনি তাঁর বেকার মেয়ে এবং ছেলের সঙ্গে শেয়ার করেন৷ লঙ্গরখানার লম্বা টেবিলে খাবারের জন্য অপেক্ষার সময় তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনক্রমে টিকে আছি৷ অধিকাংশ গ্রিকই কোনক্রমে টিকে আছে৷’’
ঋণক্ষমা নেই
এথেন্সের সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে চেসনাট বিক্রি করছেন এব বৃদ্ধ গ্রিক৷ বিক্ষোভকারীরা ট্যাক্স কমানোর দাবিতে যখন আন্দোলন করছিলেন, তখন আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা ট্যাক্স বাড়াতে এবং পেনশন কাটতে গ্রিসের উপর চাপ দিচ্ছিল৷ সেদেশের সরকার অবশ্য বলেছে গ্রিকরা ইতোমধ্যে যথেষ্ট মিতব্যয়িতা দেখেছে৷
দারিদ্র সীমার নীচে
লঙ্গরখানায় রাখা দানের পোশাক দেখছেন এক বৃদ্ধ নারী৷ গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে গরিব দেশ নয়, বুলগেরিয়া এবং রুমানিয়ায় পর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সেদেশ৷
গৃহহীনের সংখ্যা বাড়ছে
বিনা খরচায় কাপড় পরিষ্কার করানোর জন্য অপেক্ষা করছেন এক ব্যক্তি৷ ইথাকা মোবাইল লন্ড্রি সার্ভিস নামের সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা দু’টি ওয়াশিং মেশিন এবং দু’টি ড্রায়ার নিয়ে একটি ভ্যানে করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যান৷ গৃহহীনদের পোশাক-আশাক ধুয়ে দেন তারা৷ সংস্থাটির সহপ্রতিষ্ঠাতা, ফানিস স্যোনাস জানান, পুরনো গৃহহীনদের সঙ্গে নতুন মুখও যোগ হচ্ছে৷