আরব বিশ্বে সরকার-বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১আজকের বিক্ষোভ
বিক্ষোভ হয়েছে লিবিয়া, বাহরাইন, ইয়েমেন ও ইরানে৷ এর মধ্যে লিবিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয় গতকাল মঙ্গলবার৷ সারারাত ধরে চলে সেটি৷ সরকার বিরোধীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে সরকার সমর্থকরাও যোগ দিয়েছিল বলে জানা গেছে৷ এই ঘটনায় ৩৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ সরকারের বিরুদ্ধে উগ্রকণ্ঠ এক মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল৷ পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু বিক্ষোভ থামে নি৷
তবে গতরাতে বিক্ষোভ শুরু না হলেও আগামীকাল সেটা হতো৷ কারণ ফেসবুকের মাধ্যমে আগে থেকেই ঐ বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা আছে৷ উল্লেখ্য, লিবিয়ার নেতা গদ্দাফি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন৷´
এদিকে বাহরাইনের বিক্ষোভ আজ বুধবার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে৷ আন্দোলনে নিহত একজনের লাশ নিয়ে মিছিলের সময় সরকার-বিরোধীদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ইরানেও৷ সেখানেও লাশ নিয়ে মিছিলের সময় সংঘর্ষ হয়েছে৷ অবশ্য সেটা ছিল সরকার বিরোধীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ৷ আগামী শুক্রবার বিক্ষোভ হয়েছে ইয়েমেনেও৷
সংস্কারের ঘোষণা
অনেক দেশের সরকার ইতিমধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে৷ কিন্তু সেগুলোও আন্দোলনকারীদের থামাতে পারছে না৷ যেমন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহ বলেছেন, তিনি ২০১৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আর দাঁড়াবেন না৷ এমনকি তাঁর ছেলেও নির্বাচনে দাঁড়াবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু জনগণ সেটা মানতে চাইছে না৷ তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট এখনি সরে দাঁড়াক৷ উল্লেখ্য, প্রায় ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট সালেহ৷ এদিকে লিবিয়ায় বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী, ১১০ জন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার৷ বাহরাইনে প্রতিটি পরিবারকে ২,৭০০ মার্কিন ডলার করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ আলজেরিয়ায় ১৯ বছর ধরে থাকা জরুরি অবস্থা তুলে নেয়ার অঙ্গীকার করেছে সে দেশের প্রেসিডেন্ট৷ সরকার-বিরোধীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতেই এই ঘোষণা এসেছে৷ এছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ভর্তুকির পরিমাণ দ্বিগুণ করার কথা দিয়েছে মরক্কো৷ আর জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিরোধীদের চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন