আমাদের বাড়ি এখন ক্ষতিগ্রস্ত, বললেন থাই প্রধানমন্ত্রী
২১ মে ২০১০প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসানের পর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আরও প্রতিশ্রুতি আসলো যে, পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে৷
প্রায় দুই মাস ধরে লালজামাধারী আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের পরিসমাপ্তিটা ছিল খুবই বেদনাদায়ক৷ শেষ এক সপ্তাহে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৫২ জন আন্দোলনকারী নিহত এবং প্রায় চার শতাধিক গুরুতর আহত হয়, আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে৷ সেনাবাহিনীর প্রবল অভিযানের পর লালজামাধারীরা এখন ঘরে৷ অবশ্য এদের মধ্যে অনেক নেতাকর্মীকে আটকও করেছে নিরাপত্তা বাহিনী৷
শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী৷ আবেগ জড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘‘প্রিয় দেশবাসী, আমরা সকলেই একত্রে যে বাড়িতে বাস করি, সেই বাড়ি এখন ক্ষতিগ্রস্ত৷ আমাদের একে অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে একে পুনর্নির্মাণ করতে হবে৷'' বাড়ি বলতে তিনি যে শ্যামদেশকেই বুঝিয়েছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তিনি অবশ্য স্বীকার করে বললেন, নিজেদের মধ্যে যে ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসন সত্যিই একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷ আশা করা হয়েছিল, আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কোন বক্তব্য রাখবেন৷ কিন্তু সযত্নে তিনি নির্বাচনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন৷ আপিসিতের কথায়, ‘‘সকল দল ও মতের অংশগ্রহণে সংসদীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে৷ একই সঙ্গে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময়ে সমস্ত ঘটনার একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্ত হবে৷''
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরোধ মীমাংসার এই উদ্যোগে অবশ্যই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে৷ ক্ষমতা থেকে সরে যাবার পর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে৷ অবশ্য সেখান থেকেই তিনি আন্দোলনের সময়ে সরকারের দমনপীড়নের নিন্দা জানিয়েছেন৷
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন আস্টন আজই থাই পরিস্থিতি বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন৷ তিনি থাই সরকারের প্রতি আন্দোলনকারী লালজামাধারীদের মানবাধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ আস্টনের কথায়, সংঘাত শান্তি আনতে পারে না৷ আনতে পারে কেবল বিভেদ৷ যা এসেছে থাইল্যান্ড এবং এর জনগণের মধ্যে৷ তিনি সাম্প্রতিক এই আন্দোলনের প্রাণহানির ঘটনায় প্রচণ্ড ব্যথিত বলেও উল্লেখ করেছেন৷
এদিকে, কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট'এর এক বিবৃতিতে থাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে সাংবাদিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন৷ লালজামাধারী আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ সংক্রান্ত খবর সংগ্রহকালে দুই সাংবাদিক নিহত এবং ছয় জন মারাত্মক আহত হন৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন