সমঝোতার পথ বন্ধ
১৪ নভেম্বর ২০১৩বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং শিমুল বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে গত শুক্রবার রাতে৷ পরদিন শনিবার, তাঁদের মতিঝিল থানায় দায়ের করা হরতালে ভাঙচুর এবং গাড়ি পোড়ানোর দুটি পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ ঐ দিন বিকেলে তাঁদের আদালতে হাজির করে প্রতিটি মামলায় ১০ দিন করে প্রত্যেকের মোট ২০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ৷ কিন্তু পুলিশ আদালতে মামলার তদন্ত সংক্রান্ত কাগজ-পত্র উত্থাপন করতে না পরায়, তাঁদের রিমান্ড শুনানি নির্ধারণ করা হয় বৃহস্পতিবার৷ এছাড়া, তাঁদের জামিন আবেদন ‘না মঞ্জুর' করে পাঠানো হয় কারাগারে৷
বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম রেজাউল করিমের আদালতে রিমান্ডের শুনানি হয়৷ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ দাবি করেন যে, ২৪শে সেপ্টেম্বর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে এবং ৫ই নভেম্বর কমলাপুর বাজার রোডে হরতালের সময় বিএনপির এই পাঁচ নেতার পরিকল্পনা ও নির্দেশে গাড়িতে আগুন, ভাঙচুর এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ পুলিশের ওপরও হামলা চালানো হয়৷ তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চারিতার্থ করতেই বিএনপির এই নেতাদের মামলায় জড়ানো হয়েছে৷ পুলিশের কাছে কোনো প্রমাণ নেই যে তাঁরা ঐ দুটি ঘটনার নির্দেশদাতা৷ এমনকি, এজাহারেও তাঁদের নাম নেই৷ আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে প্রত্যেককে দুটি মামলায় মোট ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে৷ বিএনপির পাঁচ নেতা এখন কারাগারে আছেন৷ পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের কারাগার থেকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করা হবে৷
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবীর রিজভী বলেন, সরকারের নির্দেশেই বিএনপির পাঁচ নেতার রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত৷ সরকার আদালতকে বিরোধী দলীয় নেতাদের দমন ও নির্যাতনে ব্যবহার করছে৷ তিনি বলেন, সরকার রাজনৈতিক সমঝোতার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে৷ এখন আন্দোলনের মাধ্যমেই এর জবাব দেয়া হবে৷ জানা গেছে, সামনের সপ্তাহে আরো টানা তিন দিন হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির নেতেৃত্বে বিরোধী ১৮ দল৷ তবে কোন ৩ দিন তারা হরতাল করবে তা জানা যাবে শুক্রবার৷ আর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর লাগাতার অবরোধ, ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেবে তারা৷
তবে বিএনপির পাঁচ শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর, অন্যান্য নেতাদের এখন আর প্রকাশ্যে বা হরতালে মাঠে দেখা যাচ্ছে না৷ বাইরে থাকা নেতাদের ৫ দিন পর বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালায়ে দেখা যায়৷ কারণ, খালেদা জিয়া বুধবার রাতে তাঁর কার্যালয়ে যান৷