আফগানিস্তানে সামনে কঠিন সময় দেখছেন সিআইএ প্রধান
২৮ জুন ২০১০রোববারের ঘটনাটি ঘটেছে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ ফারাবে৷ রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নরওয়ের চার সৈন্য৷ বার্তা সংস্থা এএফপির হিসাবে, জুন মাসে এ পর্যন্ত দেশটিতে ন্যাটো বাহিনীর মোট ৯৮ জন সৈন্য নিহত হয়েছে৷ আর বছরের অর্ধেক না পেরোতেই ৩১৮ জন৷ গত বছর নিহতের এই সংখ্যা ছিলো ৫২০৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এবার আগের বছরকে ছাড়িয়ে যাবে৷
ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বৃদ্ধির পেছনে কিছু যুক্তি অবশ্য তুলে ধরেছে ন্যাটো বাহিনী৷ কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হয়েছে৷ তালেবান নিয়ন্ত্রিত এমন সব এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে, যেখানে আগে অভিযান চালানো হয়নি৷ ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা একটু বেশি৷
তবে যত যুক্তিই তুলে ধরা হোক, সৈন্যদের মৃত্যুর মিছিল আফগান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কৌশল প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে৷ আর এই নিয়ে কথা বলতে গিয়েই তো সরে যেতে হলো সেখানে ন্যাটো বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টালকে৷ যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদপত্র লিখেছে, ম্যাকক্রিস্টাল বরখাস্ত হওয়ার আগে আফগান যুদ্ধ কৌশলের সমালোচনা করে সহকর্মীদের সামনে একটি প্রতিবেদন হাজির করেছিলেন৷ তাতে বলা হয়, সামনের ছয় মাসে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির কোনো আশা নেই৷
এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র প্রধান প্যানেটা এবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, আফগানিস্তান পরিস্থিতির যতটা উন্নতি আশা করা হয়েছিলো, তা হয়নি৷ সামনে কঠিন দিন রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এমন একটি দেশ নিয়ে আমরা কাজ করছি, যেখানে সমস্যা আর সমস্যা৷ সুশাসন নেই, সর্বত্র দুর্নীতি আর মাদক, সেই সঙ্গে তালেবান জঙ্গিরা তো রয়েছেই৷''
তবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রণকৌশলে ফল হচ্ছে বলেও দাবি করেন প্যানেটা৷ তিনি বলেন, এই কারণেই তালেবানের শক্তি দিনদিন কমছে৷ তবে সব কিছুর পর আফগান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য সেই দেশের সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনী শক্তিশালী করার ওপরই জোর দিলেন তিনি৷
অন্যদিকে সোমবার কান্দাহারে ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে আটজন৷ ন্যাটোর দাবি নিহতরা সবাই জঙ্গি৷ তবে স্থানীয়রা বলছেন, বিদেশি সেনাদের অভিযানে আটজন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক