আফগানিস্তানে ন্যাটো’র বিমান হামলা, নিহত কমপক্ষে ২৭
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ন্যাটো'র নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগিতা বাহিনী বা ইসাফ-এর এক বিবৃতিতে জানা যায় যে, উরুজগানে জঙ্গি সন্দেহে এ বিমান হামলা চালায় ন্যাটো৷ অথচ হামলার বলি হয় এলাকার নিরীহ বেসামরিক মানুষ৷ ঘটনাটির তীব্র নিন্দা করেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই৷ শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে এ ধরণের কোন অপারেশনের আগে, ন্যাটো'কে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন তিনি৷
এদিকে, উরুজগান প্রদেশের গভর্নর সুলতান আলি উরুজগানি জানান, ‘‘রবিবার দাই কুন্ডি এবং উরুজগান প্রদেশে তিনটি যানের একটি বহরে গুলি চালায় ন্যাটো৷ তিনটি বিমানই কান্দাহারের পথে যাচ্ছিল৷'' তিনি জানান, হামলাটি উরুজগান প্রদেশের সীমান্তবর্তী ‘সেরমা' গ্রামের অদূরে ঘটে৷ সে সময় নিহত ব্যক্তিরা দাই কুন্ডি প্রদেশের কেরজান জেলা থেকে তিনটি মিনি বাসে করে কান্দাহারের অভিমুখে যাচ্ছিল৷ এছাড়া, এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চারজন নারী এবং দুজন শিশু রয়েছে বলেও জানান আলি উরুজগানি৷
অন্যদিকে, বেসামরিক আফগান নিহত হওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান সরকার ও বিদেশি বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে৷ উল্লেখ্য গত গ্রীষ্মে, ইসাফ-এর এক বিবৃতিতে ন্যাটো কমান্ডার মার্কিন জেনারেল স্টানলি ম্যাকক্রিস্টাল বলেছিলেন, ‘‘আমাদের মিশনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আফগান জনগণ৷ আমরা এখানে তাদের রক্ষা করতেই এসেছি৷ তাই যেভাবেই হোক, তাদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য৷''
তাই রবিবারের এ ঘটনার পর ন্যাটো কমান্ডার ম্যাকক্রিস্টাল দুঃখ প্রকাশ করলেও, শুধুমাত্র অসাবধানতার কারণে বেসামরিক আফগান হতাহত হওয়ায়, ইসাফ বাহিনীর অভিযানের ওপর আফগানদের আস্থা ও বিশ্বাস - দুই নষ্ট হওয়ার পথে, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জামারি বাশারি বলেন, ‘‘জঙ্গি আছে সন্দেহ করে ইসাফ বাহিনী কতগুলি বেসামরিক যানবাহন লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করে৷ আর একমাত্র হামলার পরই দেখা যায় যে, নিহতরা নেহাতই গ্রামবাসী৷ এটা খুবই দুঃখজনক৷''
প্রসঙ্গত, এ হামলার বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসাফ৷ তবে ঘটনাটি হেলমান্দ প্রদেশ থেকে তালেবান জঙ্গিদের নির্মূলের উদ্দেশ্যে নেওয়া সামরিক অভিযান ‘অপারেশন মুশতারাক'-এর অংশ নয় বলেও জানিয়েছে তারা৷
প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক