‘আগে চাই সম্প্রচার কমিশন’
২৫ আগস্ট ২০১৪
গত ৫ই আগস্ট সম্প্রচার নীতিমালার গেজেট প্রকাশ হয়৷ তবে এর আগে থেকেই এই নীতিমালা চরম সমালোচনার মুখে পড়ে৷ আর রবিবার ঢাকায় আর্টিকেল ১৯সহ আটটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আয়োজিত এক আলোচনা সভাতেও এর ব্যতিক্রম ছিল না৷
সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আসলে এই নীতিমালা নিয়ে আলোচানার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই৷ কারণ নীতমালা তৈরি হবে সম্প্রচার কমিশন গঠন করার পরে৷ তার আগে তৈরি করা নীতিমালা গ্রহণযোগ্য নয়৷ তিনি বলেন, সে কারণে আগেই সম্প্রচার কমিশন কেমন হবে – তা নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন৷ তাঁর কথায়, সম্প্রচার কমিশন কোনোভাবেই অবসরপ্রাপ্ত আমলা বা সামরিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠন করা যাবে না৷ এই কমিশন গঠন করতে হকে সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষক এবং সাংবাদিকতায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে৷
তিনি জানান, নীতিমালা সাংবাদিকদেরই দাবি৷ কিন্তু তাঁদের দেয়া মতামত উপেক্ষা করে আমলাদের পরামর্শে এই নীতিমালা হয়েছে, যা দুঃখজনক৷
টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই নীতিমালায় শুধু সম্প্রচার সাংবাদিকতা নয় পুরো গণমাধ্যমের স্বাধীনতাই ঝুঁকির মুখে পড়বে৷ এছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হলে দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হবে গণতন্ত্র৷ তিনি বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা মনযোগ দিয়ে পড়লে এর উদ্দেশ্য বোঝা যায়৷ এর উদ্দেশ্যই হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা৷ এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷ কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে এই নীতিমালায় ছাড় দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই ন্যায় নয়৷
ব্লাস্ট-এর অনারারি নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসন বলেন, এই নীতিমালায় যেসব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তাও আপত্তিকর৷ এ সব শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয় হয়নি৷ যেমন: কুরুচিপূর্ণ, দেশীয় সংস্কৃতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী৷ ফলে এই সব শব্দই পরে সুবিধা অনুযায়ী ব্যাখ্যা করে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘নীতিমালার ভাষা এবং নীতি দেখলে মনে হয় আমরা আগের যুগেই আছি৷ কোনো পরিবর্তন নেই৷ সামরিক শাসনামলের ভাষা এবং এই ভাষা একই রকম৷''
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের পারভিন সুলতানা বলেন, এই নীতিমালায় নারী সাংবাদিকদের অধিকার এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা নেই – যা তাঁদের হতাশ করেছে৷
আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশের পরিচালক তাহমিনা রহমানের সঞ্চালনায় সিরডাপ মিলনায়তনে ‘‘সম্প্রচার নীতিমালা: উদ্বেগ ও করণীয়' – শীর্ষক আলোচনা সভায় সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন৷ সঞ্চালক তাহমিনা রহমান বলেন, সাংবাদিকতার নীতিমালা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে৷
আয়োজক সংগঠনগুলোর মধ্যে আর্টিকেল ১৯ ছাড়াও আছে ব্লাস্ট, বিএনএসকে, আইইডি, এমএমসি, নিজেরা করি এবং টিআইবি৷