1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যানথ্রাক্সে ক্ষতি কম, আতঙ্ক বেশি

১০ অক্টোবর ২০১০

বাংলাদেশে মাংস বিক্রি এখন প্রায় বন্ধ৷ দুধের চাহিদাও কম৷ এমনকি গরুর আশেপাশেও যেতে চায় না সাধারণ মানুষ৷ মাংস নিয়ে কেন এত আতঙ্ক? অ্যানথ্রাক্স নামক এক রোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই, যে রোগে সাম্প্রতিক সময়ে কেউ মারা যায়নি৷

https://p.dw.com/p/PVWt
ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস ব্যাকটেরিয়াছবি: AP

ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস

অ্যানথ্রাক্স রোগের পেছনে রয়েছে ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস নামক এক ব্যাকটেরিয়া৷ এই ব্যাকটেরিয়া প্রতিকূল পরিবেশে বীজগুটি আকারে বছরের পর বছর বেঁচে থাকতে পারে৷ সব মহাদেশেই আছে এর বিচরণ৷ সাধারণত নিঃশ্বাসের সাথে কিংবা ত্বকের ক্ষত দিয়ে এমনকি খাদ্যের মাধ্যমেও অ্যানথ্রাক্স জীবাণু প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করতে পারে৷

রবার্ট কখ-এর আবিষ্কার

অ্যানথ্রাক্স সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রথম সনাক্ত হয় ১৮৭৫ সালে৷ সেসময় জার্মান বিজ্ঞানী রবার্ট কখ ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে অ্যানথ্রাক্সের সম্পর্ক আবিষ্কার করেন৷ ১৯৫৪ সালে মানুষের জন্য অ্যানথ্রাক্স ভ্যাকসিন বা টীকা তৈরি করা হয়৷ এই রোগ সাধারণত বন্য এবং গৃহপালিত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রান্ত করে৷

Flash-Galerie Baumwolle Kuh Viehfutter
গরুর কাছে কেউ যাচ্ছে নাছবি: BilderBox

মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না

তরুণ চিকিৎসক এম. ফায়েজ সাজ্জাদ এই বিষয়ে জানান, এই জীবাণুটা সচরাচর মানুষের দেহে ছড়ায় না৷ তবে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত কোন পশুর সংস্পর্শে আসলে মানুষও আক্রান্ত হতে পারে৷

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, লতাপাতা বা ঘাস খাওয়ার সময় বেশিরভাগ প্রাণী অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়৷ এরপর তা ছড়ায় মানুষের শরীরে৷ তবে মানুষ থেকে মানুষে অ্যানথ্রাক্স ছড়ায় না৷ ফায়েজ সাজ্জাদের কথায়, মানুষের ত্বকে খুব ছোট ক্ষত বা কাটা থাকলে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু সেখান থেকে শরীরে প্রবেশ করতে পারে৷ অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়েও এই রোগ হতে পারে৷ তবে বাংলাদেশে মাংস খেয়ে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তের খবর প্রায় শূন্যের কোঠায়৷

অ্যানথ্রাক্স নতুন কিছু নয়

বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্স কোন নতুন রোগ নয়৷ বাংলায় এই রোগকে বলা হয় তড়কা৷ এটি সহজে প্রতিরোধযোগ্য৷ তাছাড়া বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্স রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ত্বক নির্ভর হওয়ায়, মৃত্যুর আশঙ্কা নেই বললেই চলে৷

আতঙ্ক ঈদের বাজারে

অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কের প্রভাব আসন্ন কোরবানির ঈদের বাজারেও পড়তে পারে৷ তবে, বাংলাদেশ সরকার এই রোগ নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক উদ্যোগের কথা জানিয়েছে৷ কোরবানির জন্য আমদানি করা গরুর রোগ নির্ণয়ে বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষাকেন্দ্র বসানো হয়েছে৷ ইতিমধ্যে অ্যানথ্রাক্স নিয়ে জারি করা রেড অ্যালার্টও তুলে নেয়া হয়েছে৷ মোটের ওপর, কোরবানির পশু ক্রয়ের পর তা ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখারও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা৷

উল্লেখ্য, অ্যানথ্রাক্স জীবাণু জৈবিক অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করা হয়৷ বিনা চিকিৎসায় এই রোগে মৃত্যুর হার ২০ শতাংশ৷ তবে চিকিৎসার পরও এক শতাংশ মানুষ অ্যানথ্রাক্স রোগে প্রাণ হারাতে পারে৷ তাই, অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াটাই সমীচীন৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন