অল্প লবণে খাবার স্বাদ, বেশি লবণে জীবন বিস্বাদ
লবণ শুধু খাবারে স্বাদ এনে দেয়না, এই মিনারেলটি শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক৷ আবার অন্যদিকে এই লবণই শরীরের অতিরিক্ত পরিমাণে হয়ে গেলে তা জীবনকে করতে পারে দুর্বিষহ৷ আরো পাবেন ছবিঘরে৷
পুরুষরা বেশি লবণ পছন্দ করে
জার্মানিতে বলা হয়ে থাকে, একজন মানুষের দিনে প্রয়োজন ৬ গ্রাম লবণ৷ তবে জার্মানির শতকরা ৫০ভাগ নারী দিনে ৬,৫ গ্রাম লবণ গ্রহণ করে থাকেন৷ আর সে ক্ষেত্রে পুরুষ লবণ গ্রহণ করেন দিনে ৯ গ্রামেরও বেশি৷ জার্মানির ডাক্তার বুয়র্কহার্ড ভাইসার বলেন, ‘‘মানুষ যদি এতো বেশি লবণ না খেতো তাহলে উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা অনেক কমে যেতো৷’’
অতিরিক্ত লবণে হয় উচ্চ রক্তচাপ
লবণ শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক, আমাদের শরীরের যে হাজার হাজার কোষ রয়েছে, সেগুলো লবণ ছাড়া অকেজো হয়ে যাবে৷ তবে অনেক মানুষ আছেন যাঁরা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি লবণ খান খাবারে এবং পানীয়তে৷ ফলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং দীর্ঘদিন এ অবস্থা হলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়৷
দিনে ৫ গ্রাম লবণের বেশি নয়-বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা
ডাব্লিউএইচও বা বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার হিসেব অনুযায়ী একজন মানুষের দিনে ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়৷ কেক, বিস্কুট, চিপস বা পনিরের মতো নানা কিছুর মধ্য দিয়ে অনেকে দিনে ২৩ গ্রাম লবণ খেয়ে থাকেন৷
আলুর চিপস
অনেকেই টিভি দেখার সময় চিপসের প্যাকেট সাথে নিয়ে বসেন৷ টিভি দেখা শেষ হওয়ার আগেই হয়তো বা শেষও হয়ে যায় চিপসের প্যাকেটটি৷ ছোট এক প্যাকেট আলুর চিপস-এ থাকে ৬.৯ গ্রাম লবণ৷ কাজেই খাবার আগে আর একবার ভেবে দেখুন !
রেডিমেড খাবার
তৈরি খাবারে থাকে অতিরিক্ত লবণ৷ তাছাড়া অনেকেই দুপুরে ক্যান্টিন বা রেস্তোরাঁয় খেয়ে থাকেন, সেখানকার খাবারে দেয়া হয় বাড়ির তুলনায় খানিকটা বেশি লবণ৷ ইটালিয়ান মজার খাবার ‘পিৎসা’-তেও কিন্তু থাকে প্রচুর লবণ৷ তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ প্রচুর ফল, শাক-সবজি খাওয়া উচিত৷
ব্যায়াম করার তুলনা নেই
১৮টি দেশে মোট ১০০,০০০জন মানুষের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিলো৷ যাতে দেখা গেছে মানুষের শরীরে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি যত গ্রাম লবণ খাওয়া হয়, ঠিক সেভাবেই বেড়ে যায় উচ্চ রক্তচাপ৷ তবে খেলাধুলা বা ব্যায়াম ধমনীকে নমনীয় করে উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং ইনসুলিনের মাত্রা ভালো হয়৷ যারা লবণযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন, তাদের অবশ্যই প্রয়োজন যে কোনো ধরনের ব্যায়াম করা৷
টেবিলে লবণ রাখবেন না
খাওয়ার সময় প্লেটে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন, আর এটা খুব বেশি কঠিন কিছু নয়৷ খাবার টেবিলে লবণের পাত্রটি না রাখলে খাবারের সাথে আস্তে আস্তে লবণ নেওয়ার অভ্যাস কমে যাবে৷ খাবারে অতিরিক্ত স্বাদ আনতে যেয়ে জীবনের স্বাদ নষ্ট করবেন না৷