1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম পায়নি ইসি

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৭ এপ্রিল ২০১৪

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরাই ছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা৷ ফলে রেজাল্ট যা হওয়ার তাই হয়েছে৷ উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও নির্বাচন কমিশন কোনো ধরনের অনিয়ম খুঁজে পায়নি৷

https://p.dw.com/p/1BotM
ছবি: Reuters

নির্বাচনের মূল দায়িত্বে ছিলেন যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) তাঁরাই এসব অভিযোগের তদন্ত করেছেন৷ ফলে তাঁরা নির্বাচন কমিশনে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাতে কোনো ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এটিএম শামসুল হুদা এ ব্যাপারে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সবার জানা ছিল এই নির্বাচনের তদন্ত করলে কি হবে? যাঁরা তদন্ত করেছেন তাঁরা সরকারি চাকরিজীবী, তাঁরাতো আর সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না৷ আমাদের দেশে এমন মহানুভব কর্মকর্তা নেই যে, তিনি সরকারের বিরুদ্ধে লিখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন৷ তাঁদের কাছ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বেশি কিছু আশা করাও ঠিক না৷ সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে তাঁরাতো টিকে থাকতে পারবেন না৷ তাই তাঁদের কিছুই করার নেই৷ যেটা হওয়ার সেটিই হয়েছে৷''

Bangladesch Parlamentswahlen Gewalt in Rajshahi
উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, নানা অপরাধ-অনিয়ম এবং ভোটকেন্দ্র দখলের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছিল নির্বাচন কমিশনছবি: Reuters

তবে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম এসব বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন৷ তিনি বলেন, ‘‘অনিয়ম খতিয়ে দেখতে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের যুক্ত করা হয়েছে৷ কিন্তু অনেক স্থানে তাঁরা অভিযোগকারী খুঁজে পাননি৷ অনিয়মের বিষয়ে কেউ সাক্ষ্যও দিতে চাননি৷ তাই নির্বাচনে অনিয়মের তথ্য ঠিকমতো মেলেনি৷''

পাঁচ ধাপের উপজেলা নির্বাচন শেষে সহিংসতার জন্য নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ তিনটি কারণকে দায়ী করেছিলেন৷ তখন তিনি বলেছিলেন, নির্দলীয় নির্বাচনকে দলীয় রূপদান, রাজনৈতিক দলের অসহযোগিতা ও ধাপে ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠান শেষেই ফলাফল প্রকাশের কারণেই সহিংসতা বেড়েছে৷ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পর্যালোচনায় এমন তথ্য বেড়িয়ে এসেছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি৷ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন তখন তাদের পর্যালোচনায় দেখেছিল যে, প্রথম ধাপে ৬৫ কেন্দ্র, দ্বিতীয় ধাপে ১০০ কেন্দ্র, তৃতীয় ধাপে ২০০ কেন্দ্র, চতুর্থ ধাপে ৪ শতাধিক এবং পঞ্চম ধাপে ৫ শতাধিক কেন্দ্রে দখল ও অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে৷

এছাড়া নির্বাচনি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও শেষ ধাপে ব্যালটে সিল মেরেছেন বলে ইসিতে অভিযোগ এসেছে৷ আর নির্বাচনি সহিংসতায় মারা গেছেন অন্তত ১২ জন৷

এখন তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, নির্বাচনে এসবের কিছুই হয়নি!

Bangladesch Wahlen 2014 Unruhen
‘কোনো ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ছবি: DW

সুশাসনের জন্য নাগরিক, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই প্রতিবেদন হাস্যকর৷ জাতির সঙ্গে তামাশা৷ শিয়ালের কাছে মুরগী পাহারা দেয়ার মত বিষয়৷ কারণ যাঁরা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁরাই আবার তদন্তের দায়িত্বেও ছিলেন৷ ফলে যেটি আশা করা হয়েছিল সেটিই হয়েছে৷''

প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত মোট পাঁচটি ধাপে ৪৫৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এছাড়াও আগামী ১৯ মে আরো ১৪ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷ শেষ হওয়া নির্বাচন নিয়ে সহিংসতা, অনিয়ম, জাল ভোট প্রদান, রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি, ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল প্রদান, নির্বাচনের পরবর্তীতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি হুমকি-ধামকির বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে কমিশন৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, নানা অপরাধ-অনিয়ম এবং ভোটকেন্দ্র দখলের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছিল ইসি৷

২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তারা (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক)৷ কমিশন সূত্র জানিয়েছে, যশোর জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়েছে, ভোট কারচুপির প্রতিবাদে প্রতিপক্ষ দলের (বিএনপি) হরতাল ডাকার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো ভুল ছিল৷ উপজেলার সাধারণ ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নিজ নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ তাই এখানে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য