1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোবোট পাখি

৩১ মে ২০১৩

বস্তুটি পাখা নাড়ে, মাটি থেকে বাতাসে ওড়ে, ভেসে বেড়ায়৷ ঠিক যেন একটা রক্তমাংসের পাখি৷ কিন্তু ‘স্মার্টবার্ড' বা চালাক পাখি আসলে একটা যন্ত্র৷ ইঞ্জিনিয়াররা প্রকৃতির নকল করে একটি রোবোট বানিয়েছেন, যা একলাই উড়তে পারে৷

https://p.dw.com/p/18hqu
ছবি: DW

প্রযুক্তিবিদ হাইনরিশ ফ্রন্টসেক এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘বহু দশক পরে প্রযুক্তিতে একটা যুগান্তকারী উন্নতি হয়েছে, যার ফলে আমরা বলতে পারি – আমরা পাখিদের ওড়ার রহস্য ভেদ করেছি৷ আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা চিরকালই বায়োনিক্স নিয়ে কাজ করেছেন৷ আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি – পাখিরা কীভাবে ওড়ে, মাছ কীভাবে সাঁতার কাটে৷ শুরু হয় মাছের নড়াচড়া, পাখনার ব্যবহার, এ সব দিয়ে চর্চা৷ পরে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, পানিতে মাছ বা প্রাণীরা যেভাবে ঘুরে বেড়ায়, সেটা শিখতে পারলে আমরা বাতাসেও ওড়ার চেষ্টা করে দেখতে পারি৷ তাই আমরা গাংচিলকে বেছে নিয়ে ঠিক তার অনুকরণে একটা রোবোট বানিয়েছি৷''

প্রথমবার ওড়ার আগে স্মার্টবার্ড'কে বিভিন্ন পরীক্ষায় পাশ করতে হয়৷ তার মধ্যে কয়েকবার ফেল করাটাও আশ্চর্য নয়৷ কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা তিন বছর ধরে লেগে থেকে এমন একটি জটিল যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, যা প্রায় আধ কিলো ওজনের রোবোটটিকে পাখির মতো উড়তে সাহায্য করে৷ প্রতিটি অংশেরই অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে৷

একটি ইলেকট্রিক মোটর দিয়ে পাখাগুলোকে ওঠানামা করানো হয়৷ তিনটি সেন্সরের সাহায্যে স্মার্টবার্ড তার ডানা এমনভাবে ঘোরাতে পারে, যাতে সে তার ইচ্ছামতো যেদিকে খুশি উড়ে যেতে পারে৷

Hannover Messe 2011 Flash-Galerie
পাখির নকল করে স্মার্টবার্ডছবি: Deutsche Messe Hannover

স্মার্টবার্ড এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন দিশা এনেছে৷ এই যন্ত্রের পাখি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা যে জ্ঞান সঞ্চয় করেছেন, তার কল্যাণে ভবিষ্যতে এমন সব যন্ত্র সৃষ্টি করা সম্ভব হবে, যা মানুষের সাহায্য ছাড়াই কাজ করতে পারবে৷ এই সব গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতে অন্যান্য ক্ষেত্রেও কাজে লাগতে পারে, যেমন জ্বালানি শক্তির অপচয় কমানোর কাজে৷

রোবোট পাখির মতো একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য প্রযুক্তিবিদদের বিজ্ঞানীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করতে হয়৷

বন-এর বায়োনিক্স সেন্টারের অধ্যাপক হর্স্ট ব্লেকমান পাখির পালকের বায়োমেকানিক্স নিয়ে গবেষণা করেন৷ দেখেন, পাখিরা কীভাবে ওড়ার সময় বাতাসের স্রোতের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়৷ এই পদ্ধতিতে বিমানগুলিকে আরো কার্যকরী ও নিরাপদ করা সম্ভব হবে৷ অধ্যাপক ব্লেকমান বললেন, ‘‘পাখিদের ওড়া থেকে সাধারণভাবে ওড়া সম্পর্কে অনেক কিছু শেখা যায়, বিশেষ করে কম শক্তি ব্যয় করে কীভাবে ওড়া যায়৷ আমার মনে হয়, পাখির ওড়া থেকে আজও অনেক কিছু শেখা সম্ভব, যা থেকে আরও ভালো ওড়ার যন্ত্র তৈরি করা যাবে৷ এক্ষেত্রে আমি ড্রোন জাতীয় ছোট যন্ত্রের কথা ভাবছি – বড় বিমানের কথা নয়৷ কেননা সেগুলির মাপ অনেক বড়৷''

পাখিদের ওড়া নকল করতে সক্ষম – এমন যন্ত্র আরও দ্রুত, আরও নিরাপদে আকাশে উড়বে৷ স্মার্টবার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে উজ্জ্বল এক সাফল্য বটে৷ তবে যে পাখি আকাশে ওড়ে, নীড়ে ফেরে, গান গায়, তার থেকে এই যন্ত্রের পাখি আজও বহুদূরে রয়েছে৷

এসি / এসবি