1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অন্ধদের সাহায্যে এক উজ্জ্বল নাম সাব্রিয়ে টেনব্যার্কেন

১৯ মার্চ ২০১০

সাব্রিয়ে টেনব্যার্কেন জার্মান নাগরিক৷ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তিব্বতে৷ নারী এবং শিশু অধিকারই তাঁর কাজের মূল বিষয়৷ ২০০০ সালে তিনি পেয়েছেন এলিজাবেথ নরগাল পুরস্কার, ২০০৫ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলেন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য

https://p.dw.com/p/MXWn
ব্রেইল উইদাউট বর্ডাসের প্রতিষ্ঠাতা সাব্রিয়ে টেনব্যার্কেনছবি: DW/ Matthias Müller

সাব্রিয়ে টেনব্যার্কেন অন্য দশ জনের মত স্বাভাবিক হয়ে জন্মাননি৷ তিনি দৃষ্টিহীন৷ কিন্তু তাই বলে তিনি জীবনকে, আশেপাশের পৃথিবীকে থামিয়ে রাখেননি, নিজেও থেমে থাকতে চাননি৷ ১৯৯৮ সালে তিনি গঠন করেছেন, ‘ব্রেইল উইদাউট বর্ডার্স' সংস্থা৷ অন্ধ হয়েও তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে অন্যদের সাহায্য করা যায়৷ তিনি তিব্বতি ভাষা কীভাবে ব্রেইলে লেখা যায়, তা আবিষ্কার করেছেন৷ মূলতঃ তিনি সাহায্য করেন তাদের, যারা তাঁর মতই দৃষ্টিহীন৷ তিব্বতে একটি এনজিও গড়ে তোলার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘‘আমার মনে হয়ে এই সংস্থা গড়ে তোলার বিরোধিতা করেনি চীনা সরকার৷ আমাদের কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি৷ কারণ আমরা মূলত কাজ করছি দৃষ্টিহীন, তাদের জন্য৷ আমার মনে হয় সারা বিশ্বেই অন্ধদের সহায়তার জন্য নানা দেশে বিভিন্ন রকমের সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে৷ সারা বিশ্বেই এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷''

ফ্রেন্ডশিপ পুরস্কার প্রাপ্তি

Sabriye Tenberken in einer Blindenschule in Tibet
অন্ধ শিশুদের সাহায্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ টেনব্যার্কেনছবি: picture-alliance / dpa

২০০৬ সালে সাব্রিয়ে চীনা সরকারের কাছ থেকে পান ‘ফ্রেন্ডশিপ প্রাইজ' বা বন্ধুত্ব পুরস্কার৷ এটা হচ্ছে বিদেশিদের জন্য চীনা সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার৷ এ'পর্যন্ত মাত্র ২,০০০ মানুষ এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে৷ চীনা সরকার কি সাব্রিয়েকে এই পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে নিজের স্বার্থ হাঁসিল করতে চাইছে ? এ প্রশ্নের উত্তরে সাব্রিয়ে জানালেন, ‘‘আমি পুরো বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছি৷ আমার মনে হয় এই পুরস্কারের মধ্যে দিয়ে চীনা সরকার বুঝিয়ে দিচ্ছে, যে চীনা সমাজে অন্ধদের মেনে নেয়া হচ্ছে, তাদের জীবনও অন্যদের মত সহজ হোক, সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে৷ সমাজের অন্যান্য কাজে অন্ধরাও এগিয়ে আসুক, চীনা সরকার সেটাই চায়৷'' বন্ধুত্ব পুরস্কার পাওয়ার পর অনেক চীনা এসে সাব্রিয়েকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে৷ তাদের মধ্যে অনেকেই ছিল অন্ধ৷ তারা সাব্রিয়েকে বলেছে, ‘‘তোমার কাজ, এই পুরস্কার, আমাদেরই সাহায্য করবে৷ এর মধ্যে দিয়েই আমরা বোঝাতে পারবো যে সমাজে আমাদেরও কিছু করার আছে৷ এই পুরস্কার প্রমাণ দিয়েছে, যে সমাজে আমরা যারা অন্ধ, তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে৷''

তিব্বতের সমাজে কুসংস্কার

তিব্বতে যারা অন্ধ, তাদের জীবন খুব সহজ নয়৷ তাদের সহজে মেনেও নেয়া হয় না৷ এ কারণে তাদের বাইরে বা পথে-ঘাটে খুব বেশি দেখাও যায় না৷ এখনও কেন এই অবস্থা চলছে, এই প্রশ্নের উত্তরে সাব্রিয়ে বললেন, এর সঙ্গে ধর্ম কিছুটা জড়িত৷ অনেকেই মনে করে, অন্ধ হওয়া বা অন্ধ হয়ে জন্মানো এক ধরণের শাস্তি৷ পূর্বজন্মে অত্যন্ত খারাপ কাজ করলে পরজন্মে অন্ধ হয়ে জন্মাতে হয় – এমন একটি বিশ্বাস প্রচলিত৷ সবাই মনে করে এটা কর্মফল৷ আমি অনেক প্রাপ্তবয়স্কদের দেখেছি, যাদের সন্তান অন্ধ৷ তারা ভুল করেও বাচ্চাদের স্পর্শ করে না৷ কারণ তারা বিশ্বাস করে, অশুভ কিছু ভর করেছে বাচ্চার ওপর৷ বাচ্চাকে স্পর্শ করলে অশুভ শক্তি তাদের উপর ভর করবে৷ এ'ধরণের কুসংস্কারের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করছেন সাব্রিয়ে টেনব্যার্কেন৷

প্রতিবেদক: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী